ডাকাতি-ছিনতাই একটি অপরাধ। তারউপর আবার পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি। যারা ডাকাত ধরবে তাদের পরিচয়েই ডাকাতি! এই যেন বাটপারির সর্বশেষ সীমা।অস্ত্র ঠেকিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ দিয়ে গাড়িতে তুলে ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নিতেন সব কিছু। একের পর এক অপরাধ সংগঠিত হলেও তাদের খোঁজ পাচ্ছিল না পুলিশ। এভাবেই বছরের পর বছর তারা করে যাচ্ছিলেন ডাকাতি।
গত সপ্তাহে শহরের জিকে এলাকায় এক নারীর সব লুট হয়ে যায়। এরপর পুলিশের কাছে কিছু ‘সূত্র’ আসে। সেই সূত্র ধরে মাঠে নামে পুলিশের একাধিক টিম। পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে সেই ডাকাত দলের তিন সদস্য।
সোমবার সকালে জেলা পুলিশের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, আতিকুল ইসলাম আতিক, ফরদাহ হোসেন খান, ডিবির ওসি আমিনুল ইসলাম খান ও ইন্সপেক্টর আশরাফুল ইসলামসহ অন্যরা।
রবিবার রাতে ডাকাত দলের তিন সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তাদের টিমের আরো ৮ সদস্য পলাতক রয়েছে। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি কালো রঙের প্রাইভেট, দুইটি পিস্তল, ছুরি, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ, সেনাবাহিনীর গেঞ্জি, বুট, নগদ অর্থ, মাদক ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন-ঢাকার সাভার এলাকার জমির খানের ছেলে আরিফুল ইসলাম, নোয়াখালী জেলার কালামিয়া গ্রামের তোফাজ্জেল হকের ছেলে খোকন মিয়া ওরফে জামাল মিয়া ও রাজবাড়ী সদরের কোলারহাট এলাকার আব্দুর রবের ছেলে হারুন ওরফে বাবু মিয়া।
পুলিশ সুপার জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি বাংলোতে থাকতেন তারা। নিয়মিত পান করতেন ফেনসিডিল। দিনে কালো গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করতেন শহরে। সুযোগ বুঝে লোকজনকে জিম্মি করে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ছিনিয়ে নিতেন অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ মানুষের সম্পদ।
তিনি আরও জানান, তাদের ধরতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিল পুলিশের একাধিক টিম। অবশেষে তিনজনকে ধরতে পেরেছে পুলিশ। কুষ্টিয়ায় তারা ছয়টি ঘটনা ঘটিয়েছে। বিভিন্ন জেলায় তারা বহু অপকর্ম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। এছাড়া অন্য থানায় আরো মামলা রয়েছে। মামলা দায়েরের পর তিনজন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply