কিছু পুলিশের অপকর্মের কারণে গোটা পুলিশ আজ প্রশ্নবিদ্ধ। কিছু পুলিশ ধরে নিয়েছে দুর্নীতি অন্যায় অপকর্ম করলে কিছুই হয় না। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছাতে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কিছু অসাধু পুলিশ। তাদের হিংস্র থাবা থেকে সাংবাদিক পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না। সামান্য অর্থের বিনিময়ে অপরাধীর সাথে আদান-প্রদান করে মানুষকে ফাঁসানো বর্তমান কিছু পুলিশ দৈনিক উপার্জন বাণিজ্য রূপ নিচ্ছে। এমনই অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা তাকে নিয়ে আজকে এই প্রতিবেদন।
ক্ষমতার অপব্যবহারকারী বনানী থানার সাবেক ওসি ফরমান আলীকে নিয়ে অনুসন্ধানীন চলছে। অস্ত্র-মাদক একাধিক মামলার আসামিকে বাঁচাতে সংবাদকর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিলেন তৎকালীন বনানী থানার ওসি ফরমান আলী। সংবাদকর্মীকে হুংকার দিয়ে বলেন বনানীর আশেপাশে যেন তোকে না দেখি। আজ তোকে ছোট্ট একটি মামলা দিয়ে দিলাম। বনানী আশেপাশে দেখলে এমন মামলা দেবো জেলের ভিতরে সারা জীবন কাটাতে হবে। ওসি ফরমান আলী চূড়ান্ত কথা এই নিয়ে মুখ খুললেন
ওসি প্রাণনাশের হুমকিও দেন।
( সংবাদকর্মীর স্বাধীন)
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি, ঢাকা এডিশনাল আইজি, লিখিত বক্তব্য প্রেরণ করেন।
সংবাদকর্মী স্বাধীন বলেন আমি জীবনে একবারও ধুমপান করিনি অথচ আমাকে মাদকের মামলা জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে জনসাধারণ এবং যুবসমাজের কি পরিস্থিতি হতে পারে। নানান অপকর্মে লিপ্ত ও গ্রেফতার বাণিজ্য ফরমান আলীর কাছে নতুন কিছু নয়। মাদক ব্যবসায়ীর সাথে আদান প্রদান করে অনেক মানুষকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছিল ওসি ফরমান এএসআই ইমরান, এএসআই সুজন কুমার সাহা এবং এসআই শাহীন আলম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আবু তাহের ভূঁইয়া। ওসি ফরমান আলী মুখ দেখে বলে দিতে পেরেছেন কে মাদক বিক্রি করে মাদক সেবন করে। ওসি ফরমান আলীর ফর্মুলা সাধারণ মানুষের বুঝা বড় কষ্ট। বনানী ১৯ নং কড়াইল বস্তির সেভেন স্টার গ্রুপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল ফরমানের। সেই সম্পর্ককে পুঁজি করে রাজত্ব কায়েম করে চলছিল তৎকালীন বনানী থানার ওসি ফরমান। গোপালগঞ্জ বাড়ি নিজেকে টুঙ্গীপাড়া ছেলে হিসাবে নিজের ক্ষমতার কথা ও প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন ফরমান আলী।
এলাকার মন্ত্রী প্রভাবশালী নেতাদের সাথে তার চলাফেরা। তার ভাই উপজেলা টুঙ্গিপাড়ার চেয়ারম্যান। মানুষের কাছে নিজের ক্ষমতার কথা এভাবেই বলে থাকেন।
( ওসি ফরমান কি আইনের ঊর্ধ্বে???)
বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত পত্রপত্রিকায় লেখালেখি ও সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে তদন্ত প্রতিবেদনে তার অপকর্ম সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।
তবুও বহাল তবিয়তে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আবারো তাকে বহাল রাখা হয়। জনসাধারণের মনে প্রশ্ন ফরমান আলী কি আইনের উর্ধ্বে? গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ওসি সালাউদ্দিন খান নিহত হওয়ার ৪৭ দিন পর বনানী থানায় নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগ দেন বিএম ফরমান আলী।সম্প্রতি দ্য রেইন ট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় আলোচনায় আসেন এই ওসি। তবে অতীতেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫২ টি থানার মধ্যে বনানী থানার ওসি ফরমানের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। পুলিশের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাই তাকে সমীহ করে কথা বলেন। নানা অপকর্মের অভিযোগ থাকার পরও তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পান না কেউ কি কারণ ??
বনানীর এই ওসি উত্তরা ক্লাবের ডোনার ক্যাটাগরির সদস্য (মেম্বারশিপ নম্বর ডিএম ৩৯৫)। ওই পদ নিতে গেলে কমপক্ষে ৬৫ থেকে ৭০ লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। একজন ওসি কিভাবে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে উত্তরা ক্লাবের সদস্য হন তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিলেও তখন কেউই তার কিছুই করতে পারেন নি।শুধু তাই-ই নয়, গত বছরের আগস্ট মাসে বনানী থানায় যোগদানের পর থেকেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, ধর্ষণ মামলা না নেয়াসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ উঠে এই ওসির বিরুদ্ধে। সর্বশেষ বনানীতে দি রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগকারীদের চরিত্র হননের চেষ্টা করেন তিনি।ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, মামলা করতে গেলে ওসি ফরমান আলী বিষয়টি নিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন। ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পরপরই ওসি বলতে থাকেন, ‘তোমরা কি নর্তকী ? তোমরা কী হোটেলে গান গাও? সেটা না হলে হোটেলে যাবে কেন? টাকা নেওয়ার জন্য ওদের ফাঁদে ফেলতে চাও?’ এ সময় মোবাইল ফোনে দুই তরুণীর ছবি ধারণ করার আদেশও দেন তিনি।
তবে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশে মামলা গ্রহণ করার পর থেকে দৃশ্য পাল্টে যেতে থাকে। আলোচিত এ ঘটনার মধ্যেই পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পাঁচ দিনের ছুটিতে যান ফরমান আলী। সংশ্লিষ্টরা ভেবেছিলেন, এবার ফেঁসে যেতে পারেন বনানীর এই ওসি। এরই মধ্যে দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় বনানী থানার কর্তব্যে কোনো ধরণের অবহেলা আছে কিনা তা তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ডিএমপি।
সাবেক গুলশান বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় বনানী থানার কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি বা অবহেলার দায় পুলিশ নেবে না। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে গাফিলতি কিংবা ভুক্তভোগী তরুণীদের হয়রানি করার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বনানীর ঘটনা ছাড়াও ওসি ফরমানের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ
১. গত মার্চ মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওসিসিতে (ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) ৮ দিন ভর্তি ছিল একটি মেয়ে। কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কড়াইল বস্তির পাশে স্থানীয় চার যুবক তাকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে। ভিকটিম মামলা করত গেলে ওসি আর্জির কাগজ ফেলে দেয় ও আজেবাজে কথা বলে।
Leave a Reply