গত ২৮ জুলাই গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সাপ্তাহিক বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের কিছুটা পিছিয়ে দিলেও জনগণ যেন খাদ্য সংকটে না ভোগে, তা নিশ্চিত করতে মহামারীর মধ্যেও কৃষিতে অর্জিত উৎপাদন বৃদ্ধির যে ধারা তৈরি হয়েছে- তা বজায় রাখতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি গত ১১ বছরে কৃষি খাতের উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে- সারের দাম কমানো, ভালোমানের বীজ ও কার্ডের মাধ্যমে কৃষি উপকরণ সরবরাহ এবং ১ কোটি কৃষকের ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা।
প্রধানমন্ত্রী দেশে যাতে খাদ্য সংকট সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কৃষি উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শুধু খাদ্যশস্য (চাল ও গম) উৎপাদনের ধারা নয়; বরং তিনি সার্বিক খাদ্য যথা- শর্করা (চাল ও গম), আমিষ (মাছ, মাংস ও ডিম), স্নেহপদার্থ (ভোজ্যতেল ও দুগ্ধজাতীয় খাবার) এবং পানীয় (চা) প্রভৃতির উৎপাদন ধারাবাহিকতাকে বুঝিয়েছেন। এজন্য প্রয়োজন সার্বিক কৃষি খাতের (শস্য, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও বন নিয়ে গঠিত সার্বিক কৃষি খাত) উৎপাদন প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানো।
এটি ঠিক, স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রায় পাঁচ দশকে সার্বিক কৃষি খাতের শস্য উপখাতের প্রধান ফসল আমাদের প্রধান খাদ্য চালের উৎপাদন তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মূল সমস্যা হল, চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হারে ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে না।
গত এক দশকে দেশে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হারের ধারাবাহিকতা পর্যালোচনা করলেই এর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ও অন্যান্য রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশে মোট চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৪১ হাজার টন।
২০১১-১২ অর্থবছরে চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টন। অর্থাৎ ২০১১-১২ অর্থবছরে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার টন; যার অর্থ, এ বছর চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ঋণাত্মক।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার টনে পৌঁছায়। ফলে এ অর্থবছরে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার টনে। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ০৩ শতাংশ।
২০১৫-১৬ অর্থবছরেও চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার টন। অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ছিল শূন্য। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৩৮ লাখ টন। অর্থাৎ এ বছর চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ঋণাত্মক।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে চালের উৎপাদন দাঁড়ায় ৩ কোটি ৬২ লাখ ৭৯ হাজার টন। এ অর্থবছর চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ছিল অতি উৎসাহব্যঞ্জক। প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চালের উৎপাদন দাঁড়ায় ৩ কোটি ৬৭ লাখ টনে।
অর্থাৎ এ অর্থবছরে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি ঘটে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ হারে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের মে মাসে খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ওই অর্থবছরে আমন, বোরো ও আউশ মিলে ৩ কোটি ৭০ লাখ টন চাল উৎপাদন হবে। এদিকে একই মাসে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে চালের মোট উৎপাদন দাঁড়াবে ৩ কোটি ৬০ লাখ টন।
অর্থাৎ ইউএসডিএ’র হিসাব অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে চালের উৎপাদন আগের অর্থবছরের (১৯১৮-১৯) তুলনায় প্রায় ৭ লাখ টন কম হয়েছে। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হার ঋণাত্মক। ইউএসডিএ’র প্রাক্কলনকে সরকার এখন পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ করেছে বলে জানা যায়নি।
একাধিক কারণে দেশে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হারে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যাচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- এক. দেশে চালের উৎপাদন অনেকটা প্রকৃতিনির্ভর। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালের এপ্রিলে সিলেটের হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যায় সরকারি হিসাবে ১০ লাখ টন বোরো ফসল নষ্ট হয়। দেশে চাল উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আমন ফসলটির উৎপাদন প্রলয়ংকরী বন্যা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার নজিরের অভাব নেই।
দুই. সরকারের অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে খুব স্বল্প পরিমাণ ধান কেনা এবং কৃষকের উৎপাদন ব্যয় সঠিকভাবে বিবেচনায় না নিয়ে অনেকটা একতরফাভাবে ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করায় কৃষকদের ধান চাষে, বিশেষ করে চাল উৎপাদনে শীর্ষে থাকা বোরো চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
আর সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে একাধিক কারণে চাল উৎপাদন এর আগের বছরের তুলনায় কমে যায়। প্রথমত, বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা (২ কোটি ৪ লাখ টন) পূরণ হয়নি। আগের দুই অর্থবছরে (২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯) উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামে বোরো ধান বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ায় কৃষক ২০১৯-২০ অর্থবছরে কম জমিতে বোরো আবাদ করেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালকের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বোরো মৌসুমে জমি আবাদ লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১ লাখ হেক্টর কম অর্জিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পল্লী এলাকায় হাটবাজারের দোকানপাট বন্ধ থাকায় কৃষক সময়মতো সার পাননি।
এতে বোরোর ফলন ব্যাহত হয়েছে। তৃতীয়ত, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ৪৭ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বোরোর উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। তাছাড়া করোনা আতঙ্ক এবং দীর্ঘায়িত খরার কারণে এবার আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫-১৫ শতাংশ পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আমাদের খাদ্যশস্যের তালিকায় চালের পরই দ্বিতীয় স্থানে থাকা গমের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। এর চিহ্নিত কারণগুলো হল- এক. জনসংখ্যা বৃদ্ধি। স্বাধীনতার সময়ের সাড়ে ৭ কোটি জনসংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ কোটিতে। দুই. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য সচেতনতা। সময়, আয় ও জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তনের দোলা খাদ্যাভ্যাসেও লেগেছে।
উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিুবিত্ত- সব শ্রেণির ভোক্তার খাদ্য তালিকায় গম তথা আটা-ময়দা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। এক্ষেত্রে আয়ের পাশাপাশি ভূমিকা রাখছে স্বাস্থ্যসচেতনতা। সুতরাং গমের চাহিদা বাড়ছে বৈ কমছে না।
তিন. খুচরা বাজারে মোটা চাল ও আটার দামে পার্থক্য সামান্য হলেও মাঝারি ও সরু চালের তুলনায় আটার দাম বেশ কম। ফলে গমের চাহিদা বাড়ছে। আর গমের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চললেও এর উৎপাদন নব্বইয়ের দশকের শেষদিকের তুলনায় বহুলাংশে কমে গেছে।
সরকারি তথ্য মোতাবেক, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে দেশে গমের উৎপাদন হয়েছিল ১৯ লাখ ৮ হাজার টন; আর এখন তা ১২-১৩ লাখ টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বর্তমানে দেশে গমের বার্ষিক চাহিদা দাঁড়িয়েছে কমবেশি ৭০ লাখ টন। দেশে গমের চাহিদার তুলনায় উৎপাদনের পরিমাণ পাঁচ ভাগের এক ভাগে নেমে আসায় দেশ গমে প্রায় পুরোপুরি আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) দেশে চাল ও গম আমদানি হয়েছে ৬৪ লাখ টন ও ৩৮ হাজার টন, যা গত চার দশকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অবশ্য চাল আমদানির পরিমাণ মাত্র ৪ হাজার টন। বাকি ৬৪ লাখ ৩৪ হাজার টন পুরোটাই গম।
গত মার্চে দেশে শুরু হওয়া নোভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও আমাদের কৃষক মহামারীর ভয় দূরে ঠেলে দিয়ে চাল-গম মিলে কমবেশি ৩৭২ লাখ টন খাদ্যশস্য (চাল ৩ কোটি ৬০ লাখ টন এবং বাকিটা গম) উৎপাদন করেছেন।
দেশের প্রয়োজন মেটাতে পুরোপুরি সক্ষম না হলেও করোনা মহামারীতে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য তলানিতে ঠেকার সময় কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। এজন্য তাদের কাছে আমাদের ঋণের শেষ নেই।
দেশের উত্তরাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বিস্তৃত চলতি বন্যার অবনতি না হলে এবং আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এটি স্থায়ী হলে চলমান আমন ফসলের তেমন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে এটি প্রলয়ংকরী রূপ নিয়ে আগস্টের চতুর্থ বা শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হলে এবং দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পুরোপুরি বন্যাক্রান্ত হলে তা আমন উৎপাদনের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ তখন রোপণের জন্য চারা পাওয়া যাবে না এবং কিছু পরিমাণে পাওয়া গেলেও অনেক দেরিতে রোপণের ফলে ফলনের পরিমাণ খুব কম হবে।
দেশে করোনা মহামারীর অবস্থান আগামী ডিসেম্বর বা তার বেশি সময়ের জন্য দীর্ঘায়িত হলে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তায় আমনের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই চলমান আমন আবাদ থেকে যাতে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায়, সেজন্য সব ধরনের সহায়তা নিয়ে সরকারকে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে।
গত অর্থবছরে চাল উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থতা, চলতি আমন আবাদের সফলতা নিয়ে ঝুঁকি বজায় থাকা এবং করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আগামী ডিসেম্বরের পরেও বজায় থাকা- এসব ফ্যাক্টর বিবেচনায় নিয়ে সরকারের উচিত হবে, অবিলম্বে কিছু পরিমাণ চাল আমদানি করা।
সরকার অবশ্য ইতোমধ্যে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাল আমদানির শুল্কহার যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে আনা হলে বেসরকারি খাত চাল আমদানিতে উৎসাহিত হবে। স্মর্তব্য, চালের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি তুলে নিয়ে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে চাল আমদানি করে ২০১৭ সালে চাল সংকটের মোকাবেলা করা হয়েছিল। তবে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে, যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল আমদানি করা না হয়। কারণ তাহলে আগামী দিনে আমাদের কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
আমিষের প্রধান উৎস- মাছ, মাংস ও ডিম। মাছ উৎপাদনে স্বনির্ভরতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলেও চাহিদার তুলনায় মাংস ও ডিমের উৎপাদন অনেক কম। সদ্যসমাপ্ত সপ্তম পঞ্চবার্ষিক (২০১৫-২০) পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশে মাংসের ঘাটতি ৩৭ শতাংশ। পোলট্রি থেকে ডিম প্রাপ্যতার ক্ষেত্রেও ঘাটতি রয়েছে।
সপ্তম পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশে দুধের ঘাটতি ৫৭ শতাংশ। দেশ ভোজ্য তেলে বহুলাংশে আমদানি নির্ভরশীল। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশে ভোজ্য তেলের বার্ষিক চাহিদা ১৯-২০ লাখ টন। এ চাহিদার বিপরীতে তেলজাতীয় শস্য উৎপাদন হচ্ছে ১০ লাখ টন।
এখান থেকে ভোজ্য তেল পাওয়া যাচ্ছে চার থেকে পাঁচ লাখ টন। ফলে দেশে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ লাখ টন। পেঁয়াজ, আদা ও রসুনসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার ক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই আমদানি নির্ভরশীল।
সবশেষে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সুর ধরে বলতে চাই- খাদ্য উৎপাদনে, বিশেষ করে প্রধান খাদ্যশস্য চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির উচ্চহার অর্জন করতেই হবে। সাম্প্রতিককালে, অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চাল উৎপাদনে অর্জিত ৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হার ধরে রাখতে হবে।
করোনা মহামারীর কারণে এ প্রবৃদ্ধি হার অর্জন বিশেষভাবে জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশে গমের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন পাঁচ ভাগের এক ভাগে নেমে আসায় প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী গত অর্থবছরের ১০ মাসে পণ্যটি আমদানিতে ব্যয় হয়েছে কমবেশি ১০ হাজার কোটি টাকা।
১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে দেশে ১৯ লাখ ৮ হাজার টন গম উৎপাদন করা সম্ভব হলে এখন সে পরিমাণ গম উৎপাদন সম্ভব হবে না কেন? মাংস, ডিম ও দুধ উৎপাদনের বিষয়টিতে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, বৈশ্বিক পুষ্টিমানে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। তাই সার্বিক কৃষি খাতের উৎপাদনে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হার অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশকে খাদ্যে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক খাদ্য সচিব
দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত নিউজ থেকে
Leave a Reply