৭ ফেব্রুয়ারি বড় আয়োজন করে বাংলাদেশের সহস্রাধিক হাসপাতালে একযোগে শুরু হয় গণটিকাদান কর্মসূচি। এ কর্মসূচি শুরু হওয়ার দেড় মাসের কিছু বেশি সময়ে এসে বাংলাদেশের প্রায় অর্ধকোটি মানুষ নিয়ে নিয়েছেন প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ। তবে গেল কয়েকদিন দেশে করোনা সংক্রমণের আবার ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে, যেটিকে বলা হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ।
২৩ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী দেশে এ পর্যন্ত করোনার টিকা নিয়েছেন ৪৯ লাখ ৯০ হাজার ২৩২ জন। এর মধ্যে ৩১ লাখ ২৪ হাজার ৭২৮ জন পুরুষ এবং ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৪ জন নারী। টিকা নেওয়ার পর তাদের মধ্যে ৯২০ জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতর যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে তা বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৭৮ হাজার ৩৩০ জন করোনার টিকা নিয়েছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ৪৩ হাজার ৯৯৫ এবং নারী ৩৪ হাজার ৩৩৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, সারা দেশে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম শুরুর পর ঢাকা বিভাগে এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯১ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে টিকা নিয়েছেন ৭ লাখ ৯২ হাজার ২১২ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ২ লাখ ২৮ হাজার ৮০৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৯১৩, রাজশাহী বিভাগে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৪২, রংপুর বিভাগে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮৯, খুলনা বিভাগে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪২, বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ২৮ হাজার ৩৭৪ এবং সিলেট বিভাগে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৮ জন করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা নিতে দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৭ জন টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন।
বাংলাদেশে যে টিকা দেওয়া হচ্ছে সেটি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার আবিষ্কার করা এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা।গত ৪ মার্চ করোনার টিকা নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনা করোনাভাইরাসের টিকা নেন।
এ ছাড়াও অনেক বিশেষ ব্যক্তি ও মন্ত্রীও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দেশব্যাপী ১ হাজার ৫টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। এখন সম্মুখ সারির কর্মী ও ৪০ বছরের বেশি বয়সী মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু গেল কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতর সর্বশেষ যে তথ্য দিয়েছে তাতে নতুন করে আরও ৩ হাজার ৫৫৪ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে; যা সাড়ে আট মাসে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ ২০২০ বছরের ২ জুলাই এর চেয়ে বেশি আক্রান্ত ছিল দেশে। সেদিন আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ হাজার ১৯ জন।
আজ ১৮ জনের মৃত্যুর কথাও জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৭৩৮ জনে।
Leave a Reply