রাত পোহালেই ঈদ! ঈদের বাকি মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন। সবদিকেই চলছে ঈদের পূর্ণ প্রস্তুতি। যার আলোকে এই ঈদের প্রধান প্রয়োজনীয় প্রাণী বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চলছে নানান আয়োজন। গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা আশায় বুক বেঁধেছেন মুখে হাসি ফোটাবার। সারা বছর ধরে লালন পালন করে চলেছেন পরম যত্নে। অবশেষে সেই সময় একান্তই এইক্ষণে।
নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার মাউলী ইউনিয়নের তেলিডাঙ্গা ঘাট থেকে কাঙ্খিত স্বপ্ন পুরনের উদ্দেশ্যে আশায় বুক বেঁধে,বৃষ্টিতে ভিজে একটু বেশি লাভের আশায় বিভাগীয় শহর খুলনা অভিমুখে রওনা করছেন গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ। নদীর ঘাটে প্রিয় প্রানীটিকে এগিয়ে দিতে এসেছেন গৃহবধূরাও। পুরুষদেরকে আগামী ৩/৪ দিন বিভাগীয় শহর খুলনার গরুর হাটে বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, রাত জেগে, খেয়ে না খেয়া কাটাতে যাকিছু টুকিটাকি প্রয়োজন সেগুলো গুছিয়ে ট্রলারে তুলে দিচ্ছেন গৃহের মেয়েরা। সেই সাথে আগামী ৩/৪ দিনের গরুর খাবারও ট্রলারে তুলতে সহযোগিতা করছেন তানারা।
সকলের ব্যস্ততার মাঝে দু’একজনের সাথে কথা বলতে চেষ্টা করলে জনাব সাহেব কাজী বলেন-
” আমরা অনেক কষ্ট করে এই গরুগুলো বড় করেছি। সেই সাথে আমাদের খরচও করতে হয়েছে অনেক। এমনকি অনেকে আছেন যাঁরা তাদের শেষ সম্বলটুকু বিনিয়োগ করে বড় করে তুলেছেন দু’একটা গরু। অনেকে গরু পুষতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। এখন সবাই এই আশায় আছেন যে ভালোভাবে যাতে সবাই তাঁদের গরুগুলো সঠিক মূল্যে বিক্রয় করতে পারেন।”
গরুগুলো বিভাগীয় শহর খুলনায় নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন-
” স্থানীয় বাজারগুলোর চাইতে খুলনাতে হয়তো দাম কিছুটা বেশি পাওয়া যেতে পারে! শহর পর্যায়ে ধনী মানুষদের বসবাস বেশি। যে কারণে সেখানে তুলনামূলক কেনাবেচা বেশি হয়। ক্ষেত্রবিশেষে দামও গ্রামের তুলনায় কিছুটা বেশি পাওয়া যায়। গ্রাম থেকে গরুর বেপারীরা গরু কিনে নিয়ে শহরে বিক্রয় করে যে লাভটা করে সেই লাভের টাকাটাও এক্ষেত্রে গরুর মালিক পেতে পারবে। তবে কিছুটা ঝুঁকি তো এক্ষেত্রে থেকেই যায়। যেমন এইসমস্ত গরুগুলো ট্রলারে করে নদীপথে নেওয়ার একটা ঝুঁকি, মার্কেট মন্দার ঝুঁকি,মার্কেটে নিরাপত্তার কিছু বিষয়, এবং সেইসাথে কষ্টের ব্যাপার তো থেকেই যায়।”
নাম না জানা একজন গৃহবধূর সাথে কথা বলতে চেষ্টা করলে তিনি বলেন-
” অনেক কষ্ট করে গরুটাকে বড় করেছি। খরচও হয়েছে অনেক। এখন ঠিকঠাক বিক্রি করে ভালোয় ভালোয় সবাই বাড়ি ফিরুক সেই কামনা করি আল্লাহর নিকট।”
Leave a Reply