নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ, ঝাড়ু মিছিল ও অবরোধ করে সড়কে অবস্থান করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই আবদুল কাদের মির্জা ও তার সমর্থকরা।
আচরণবিধি প্রতিপালন বিষয়ক সভায় ক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে গিয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকরা বিক্ষোভ সমাবেশ, ঝাড়ু মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে অগ্নিসংযোগ করেন। বসুরহাট জিরোপয়েন্টে বঙ্গবন্ধু চত্বরে রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি প্রতিপালন বিষয়ক সভা চলছিল।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জিয়াউল হক মীর, জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলমসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা, মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা নিজ দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র, ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেন। দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা দুর্নীতিবাজ হওয়ায় ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করায় একজনও নির্বাচিত হবে না, এরা সবাই দালাল বলে তিনি সভায় উল্লেখ করেন। এ সময় নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মেয়র মির্জাকে আর কোনো কথা আছে কিনা বলুন, আচরণবিধি প্রতিপালন সভায় আচরণবিধি বিষয়ে বলুন। এতে মেয়র মির্জা ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
মুহূর্তের মধ্যে বসুরহাট জিরোপয়েন্ট বঙ্গবন্ধু চত্বরে তার সমর্থকরা সমবেত হয়ে ঝাড়ু মিছিল, সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে আবদুল কাদের মির্জা সেখানে যুক্ত হন।
সেখানে তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরী, তার স্ত্রী কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিউলী একরাম, তাদের ছেলে সাবাব চৌধুরী, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম হাজারী এমপি, ফেনী পৌরসভার মেয়র প্রার্থী স্বপন মিয়াজী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, তার ভাগ্নে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, পদচ্যুত এবং বরখাস্ত করা ছাড়া আমি বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান ছাড়ব না বলে মাইকে ঘোষণা করেন।
এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু চত্বরে স্যালাইন লাগানো অসুস্থ অবস্থায় শায়িত ছিলেন। চিকিৎসক এবং সরকারি অ্যাম্বুলেন্স তার চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত ছিল।
এ অবস্থা চলাকালে কার্যত বসুরহাট বাজারে চরম আতঙ্ক বিরাজ এবং সর্বত্র স্থবিরতা নেমে আসে। দোকানপাট, অফিস-আদালত সব কিছু বন্ধ হয়ে সড়কগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। এ সময় তার সমর্থকরা বসুরহাট বাজারে খাবার হোটেল ও ফার্মেসি ছাড়া সব দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি জাহেদুর রহমান রনির মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে জানতে বারবার চেষ্টা করার পরও তার সংযোগ পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply