কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা কোনও মামলা সরকার প্রত্যাহার করতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা কোনও মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশও করা যাবে না বলেও রায় ঘোষণা করেছেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার রায় দিলেও রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রকাশ পেয়েছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাইকোর্টের এ রায় যুগান্তকারী। এমন রায়ের মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালত দুদকের মামলার বিষয়ে কোনও ধরণের নাক না গলানোর সর্তকবাতা দিয়েছেন। দুদকের মামলা সরকার চাইলেও যে প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারবে না, এ নিয়ে হাইকোর্টের রায় এটাই প্রথম বলেও তিনি জানিয়েছেন।
জানা যায়, বিগত১/১ এরপর আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন ফৌজদারিসহ অসংখ্য মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী, এ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেই সময় দুদকের মামলাও প্রত্যাহারের আবদেন করা হয়। তখন অনেক ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার হলেও দুদকের মামলা আইনি প্রশ্ন জড়িত থাকার কারণে কোনও মামলা প্রত্যাহার হয়নি। কিন্তু ওই সময়ে সিলেটের ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৫টি টিন চুরির অভিযোগে দুদকের মামলা প্রত্যাহার করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সুপারিশ করে।
আদালতও মামলাটি চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহারের আদেশ দেন। এ ঘটনায় ২০১৬ সালে হাইকোটে রিভিশন আবেদন করে দুদক। আবেদনে বলা হয়, যে প্রক্রিয়ায় এটি করা হয়েছে তা সঠিক আইন মেনে হয়নি। সে আবেদনের ওপর হাইকোট চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন বৃহস্পতিবার।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ২০০৪ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী দুদক একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা। এর ফলে দুদকের অনুমোদিত কোনও মামলা প্রত্যাহারের কেউ কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামির আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না সে বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
Leave a Reply