নওগাঁর রাণীনগরে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে তানজিলা খাতুন বৃষ্টি (২১) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। স্বজনদের অভিযোগ- স্বামীকে পরকীয়া করতে নিষেধ করায় এবং পারিবারিক কলহের জের ধরে তানজিলা খাতুন বৃষ্টিকে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসাপাতালে মারা যান গৃহবধূ তানজিলা খাতুন বৃষ্টি। এ ঘটনায় মেয়েকে হত্যার অভিযোগ এনে স্বামী, শশুরসহ কয়েকজনের নামে রাণীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃষ্টির বাবা। নিহত তানজিলা খাতুন বৃষ্টি উপজেলার চকমনু গ্রামের সুমন আলীর স্ত্রী এবং ছয়বাড়িয়া গ্রামের হেলাল ফকিরের মেয়ে।
জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের হেলাল ফকিরের মেয়ে তানজিলা খাতুন বৃষ্টির সঙ্গে পাবিবারিকভাবে চকমনু গ্রামের হবির ছেলে সুমন আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কারনে অকানে স্বামী সুমন, শশুর হবিসহ শশুরবাড়ির লোকজন বৃষ্টিকে নির্যাতন করে আসছিল। এসব ঘটনা নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে মিমাংসাও করা হয়। এরই মধ্যে বৃষ্টির স্বামী সুমন মোবাইল ফোনে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একারণে বৃষ্টি ও তার স্বামীর মধ্যে কলহ চলে আসছিল।
গৃহবধূর বাবা হেলাল ফকির জানান, আমার মেয়ে বৃষ্টি তার স্বামী সুমনকে বার বার পরকীয়া করতে নিষেধ করে আসছিল। বিষয়টি সুমনের পরিবারের লোকজনও জানতো। এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে আবারও বৃষ্টি তার স্বামীকে পরকীয়া করতে নিষেধ করে। এনিয়ে স্বামী সুমন, শশুর হবিসহ শশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বৃষ্টির ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে কৌশলে বৃষ্টিকে তার স্বামী, শশুরসহ শশুরবাড়ির লোকজন মিলে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ায়। এরপর মেয়ের শশুরবাড়ি থেকে আমাকে জানানো হয় আপনার মেয়ে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েছে। তৎক্ষাণিক আমি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে মেয়ের লাশ দেখতে পাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টিকে তার স্বামী, শশুরসহ শশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে বৃষ্টির স্বামী, শশুরসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারের দাবিও জানিয়েছেন বৃষ্টির স্বজনরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত স্বামী সুমনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একই বিষয়ে শশুর হবির কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে বৃষ্টির শশুরবাড়ির লোকজনের দাবি- বৃষ্টি নিজেই বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, গৃহবধূ বৃষ্টির বাবা বাদী হয়ে বৃষ্টিকে হত্যার অভিযোগ এনে কয়েকজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর লাশের ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
Leave a Reply