নেশার টাকা না পাওয়ায় মাদকাসক্ত ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩২) কতৃক তার মাকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত মা হলেন জয়তুন বেগম (৫৫)। তার বাড়ি পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার পশ্চিম মিঠাপুকুর গ্রামে।
সে ওই গ্রামের আব্দুল মজিদের স্ত্রী। শনিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে জলা সদরের পশ্চিম মিঠাপুকুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শহিদুল ইসলাম এলাকায় মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। মাঝে মধ্যেই মাদক কেনার টাকার জন্য বাবা মা ও বোনকে মারধর করতো সে। তার এমন আচরণের কারণে কয়েক বছর আগে তার স্ত্রীও চলে যায়। তার উৎপাত বেড়ে গেলে গত দেড় বছর পূর্বে পরিবারের লোকজন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কয়েক মাস আগে জেল থেকে বের হয় সে। তারপর আবারো নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে সে।
প্রতিবেশি মালেকা বেগম জনম শনিবার দুপুরে টিউবওয়েলের পাশে কাজ করছিল তা মা জয়তুন বেগম। এ সময় হঠাৎ চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা ছুটে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় জয়তুনকে দেখে পালিয়ে যাচ্ছেন তার ছেলে শহিদুল।
প্রতিবেশী মো. খোকন জানায় মাদকাসক্ত শহিদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে বলেন, আমাদের এর আগে শহিদুল ইসলাম তার বাবাকে তিন বছর পূর্বে নেশার টাকার জন্য মারধর করেছিল। তখন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আজ নেশার টাকা না পেয়ে তার মা কে হত্যা করেছেন ওই শহিদুল। তার মা কঠোর পরিশ্রম করেছিল মানুষের বাসায় রান্নার কাজ থেকে শুরু করে নদীতে পাথর উঠানোর কাজও করে সংসারে এত অভাবের মধ্যে ছেলেকে নেশার টাকা যোগান দেওয়া তার পক্ষে অসম্ভব ছিল।
উদ্ধার করে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা ব্যক্তি আবুল কালাম আজাদ জানায়, জয়তুন বেগম গোসল করার জন্য টিউবওয়েলের পাড়ে যায়। আমি চিৎকার শুনে এসে দেখি দা দিয়ে কোপানো গলা দিয়ে জয়তুন বেগমের রক্ত বয়ে যাচ্ছে। টিউবওয়েল পাড়ে রক্ত বয়ে যাচ্ছে অপরদিকে আমি শাড়ি দিয়ে জয়তুনের গলা পেচিয়ে আমি হাসপাতালে নিয়ে আসি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এস এম শফিকুল ইসলাম হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানায়, ছেলে কর্তৃক তার মাকে খুনের ঘটনা ঘটেছ। ঘটনার পরই আমাদের ফোর্স ওই মাদকাসক্ত ছেলেকে আটকের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। খুব দ্রুতই শহিদুল ইসলামকে খুঁজে বের করা হবে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার রাকিবুল হাসান, জানায় মৃত অবস্থায় হাসপাতালে জয়তুন বেগম কে নিয়ে আসা হয়েছে। গলায় ধারলা অস্ত্রের আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তিনি। নিহত ওই নারীর লাশ ময়নাতদন্তে প্রেরণ করেছে পুলিশ। নেশার কারণে তার বউ একটি মেয়ে নিয়ে শহিদুলের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
Leave a Reply