নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মিরওয়ারিশপুর গ্রামে নাজিমুল ইসলাম তামিম নামের পৌনে ৩ বছর বয়সী এক শিশুকে বিক্রির ৪দিন পর ২দালালসহ ৬জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, শনিবার (১৪ নভেম্বর) রাতভর নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৪ জনকে আটক এবং বিক্রি করা শিশুটি উদ্ধার করা হয়।
এরআগে, গত (১০ নভেম্বর) প্রতারণা করে শিশুটি বিক্রি করে দেয় তার নানা-নানী। ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুটির নানা-নানীকে আটক করলে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২ দালালসহ ৪ আসামিকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো, লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার দক্ষিণ টুমচর গ্রামের আলা উদ্দিন (৪৫), নিলুফা বেগম (৪০) ও সেনবাগ উপজেলার উত্তর শাহাপুর গ্রামের আবু তালেব (৩৮), সালমা আক্তার (২৫), আবুল খায়ের (৬৫), জামাল উদ্দিন (৩৮)।
শিশুটির মায়ের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, শিশু নাজিমুল ইসলাম তামিম বেগমগঞ্জের মীররওয়ারিশপুর এলাকায় নানা-নানীর কাছে ভাড়া বাসায় থাকে। শিশুটির মা একজন কর্মজীবি মহিলা। ২০১৭ সালে তার প্রথম বিবাহ হয়। এরপর ২০২০ সালে ওই স্বামীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে তার দ্বিতীয় বিবাহ হয়। বর্তমান স্বামীর সাথে বিবাহের পর আগের সংসারের ছেলেকে তার পিতা-মাতার কাছে রেখে বর্তমান স্বামী ঘরে চলে যায়। এক পর্যায়ে শিশুটির নানা-নানী শিশুটির ভরণপোষণে অক্ষমতা প্রকাশ করে আবু তালেব এবং সালমা বেগমের নিকট ছেলেকে দত্তক দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। শিশুর মা দত্তক দিতে অস্বীকার করায় আটককৃত ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলকভাবে শিশুর মায়ের কাছ থেকে একশত টাকা মূল্যের তিনটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে গত (১১ নভেম্বর) শিশুটির মা ফেনীর বর্তমান স্বামীর বাসা থেকে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেগমগঞ্জে পিতার বাসায় আসেন। ওই দিন আশপাশের লোকজন তাকে টাকার বিনিময়ে ছেলেকে বিক্রির অপবাদ দিতে থাকে। এ বিষয়ে তিনি তার পিতা-মাতাকে জিজ্ঞাসা করলে তারা ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন। পিতা-মাতার কাছে ছেলের সন্ধান লাভে ব্যর্থ হয়ে থানায় অভিযোগ করলে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ শিশুর নানা-নানীকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যমতে সেনবাগ উপজেলার ৬নং কাবিলপুর ইউনিয়নের উত্তর শাহাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান শিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হয়েছে। মামলার আলোকে আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply