নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ০৬ সদস্য গ্রেফতার, আগ্নেয়াস্ত্রসহ ডাকাতির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত কয়েকদিন ধরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় পুরান ডাকাত দালের সদস্য ইউসুফ @ কালা, আজাদ এবং সালা উদ্দিন এর নেতৃত্বে কতিপয় ব্যক্তি একত্রিত হয়ে নতুন করে ডাকাতদল গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইউসুফ ডাকাত এর আগেও বেশ কয়েকটি ডাকাতির সাথে জড়িত। সে পুলিশি অভিযানে বিভিন্ন সময়ে নোয়াখালীর বাহিরে ঢাকা, খাগড়াছড়ি, ফেনী পালিয়ে থাকতো এবং সময় সুযোগ বুঝে ডাকাতি করার চেষ্টা চালাতো। এরই ধারাবাহিকতায় ইউসুফ নতুন এবং পুরাতন সদস্যদের সমন্বয়ে নতুন ডাকাতদল সংগঠনের চেষ্টা চালায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইউসুফসহ দলের সন্দহভাজন অন্যদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের নজরদারীর আওতায় আনা হয়। কিন্তু তাদের অস্ত্র এবং আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি কোথায় ছিল সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য যোগাড় করা যায়নি। নজরদারীর একপর্যায়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় এই ডাকাত দলের ৯/১০ জন সদস্য বেগমগঞ্জের জিরতলী ইউনিয়নে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করেছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বেগমগঞ্জ সার্কেল এবং অফিসার ইনচার্জ, বেগমগঞ্জ থানার প্রত্যক্ষ তত্ত¦াবধানে এসআই/কৃষ্ণ কুমার দাস, এসআই/ফিরোজ আহাম্মদ এবং এসআই/স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ এর নেতৃত্বে বেগমগঞ্জ থানার কয়েকটি টিম জিরতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পুলিশি তৎপরতা এবং নজরদারী বৃদ্ধি করে তল্লাশী পরিচালনা করে। তল্লাশী কার্যক্রমের একপর্যায়ে জিরতলী ইউনিয়নের মধ্য জিরতলী মজু বেপারীর বাঁশ বাগানের ভিতরে সন্দেহজনক শব্দ ও নড়াচড়া নজরে আসলে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশি অভিযান টের পেয়ে ডাকাতদলের সদস্যরা পিছনের জলাভূমিতে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলায়। তখন স্থানীয় জনগনের সহায়তায় পুলিশে অভিযান চালিয়ে ০৪ জন ডাকাতকে বিল থেকে আটক করে। এ সময় ইউসুফ @ কালার নিকট থেকে একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ সময়ে স্থানীয়রা জানায় একজন ব্যক্তি ভেজা শরীরে পাশ^র্বতীর্ এক বাসায় ঢুকেছে। খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ সে বাসায় অভিযান পরিচালনা করে ভেজা পরিধেয় বস্ত্র পরিবর্তন করার সময় উক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে তার নাম গিয়াস উদ্দিন বলে জানায়। আকটকৃত ডাকাতরাও গিয়াসকে তাহাদের সহচর ও দলের সদস্য হিসাবে সনাক্ত করে। পরবতীর্তে গিয়াসের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মোতাবেক তার বাসা থেকে একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের স্বীকারোক্ত মোতাবেক ডাকাতদলকে সহায়তাকারী হিসাবে সফিক নামক একজন গ্রেফতার করা এবং ডাকাতদের আনা নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত একটি অটোরিক্সা আটক করা হয়। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ০২টি হাসুয়া, ০২টি ক্রিজ, ০২টি কোরা বাড়াল, ০১টি গ্রিল কাটার, ০১টি প্লাইরেঞ্জ, ০১টি টর্চলাইট উদ্ধার করা করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আজাদ, ইউসুফ, সালাউদ্দিন মিলে সিএনজি ভাড়া করে বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করার জন্য পছন্দমত বাড়ি খুজতো এবং সে ব্যাপারে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করত। গতকাল রাতেও তারা মধ্য জিরতলী বাজার এলাকার তিনটি বাড়ী (আমির ও সেলিম হোসেন, অলিউল্যাহ, মোখলেছুর রহমান এর— যারা এলাকায় প্রবাসী বলে জানা যায়) কে টার্গেট করে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিল।
আটককৃত ডাকাতদের পিসিপিআর
১। ডাকাত ইউসুফ প্রঃ কালার বিরুদ্ধে সুধারাম থানা, নোয়াখালী ও চন্দ্রগঞ্জ থানা, লক্ষ্মীপুর- এ অস্ত্রসহ ০৫টি মামলা রয়েছে।
২। ডাকাত গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে ফেনী লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদকসহ ০৩টি মামলা রয়েছে।
৩। ডাকাত আজাদ এর বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ ও সুধারাম থানা নোয়াখালী এবং পুঠিয়া থানা, রাজশাহী জেলায় চুরি, চাঁদাবাজী ও অস্ত্রসহ মোট ০৮টি মামলা রয়েছে।
৪। ডাকাত মনির হোসেন এর বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর থানা এবং সোনাইমুড়ী থানা, নোয়াখালী জেলায় অস্ত্র, ডাকাতি এবং ডাকাতির প্রস্তুতিসহ ০৫টি মামলা রয়েছে।
Leave a Reply