স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষকবান্ধব নীতি কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। এই সফলতার পেছনে খেটে খাওয়া কৃষক-মজুরদের অবদান অনস্বীকার্য।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ফিউচার আর্থ সাউথ এশিয়া রিজিওনাল অফিসের উদ্যোগে আয়োজিত দ্বিতীয় গভর্নিং কাউন্সিল মিটিংয়ে গভার্নিং কাউন্সিল সদস্য হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার সফলতায় গৃহীত পদক্ষেপসমূহ ফিউচার আর্থ সাউথ এশিয়া প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরেন তিনি। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ফিউচার আর্থ সাউথ এশিয়া রিজিওনাল অফিসের এ ধরনের উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
ড. শিরীন শারমিন বলেন, সরকার কৃষকদের ভাগ্যোন্নয়ন ও দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাকে আরও সচল করতে এবং এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে তা বাস্তবায়নে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। গত দশ বছর ধরে সরকার বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে কৃষি ও খাদ্য খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব কৃষকের নিজ জমি নেই, তাদের জন্য বিশেষ জামানতবিহীন কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬ শত ৫৯ জন কৃষককে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিদ্যুতের ওপর ভর্তুকি, কৃষিকাজে স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য কৃষকদের মাঝে স্মার্টকার্ড সরবরাহ, কৃষিপণ্য যেমন-বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি সুশৃঙ্খলভাবে বিতরণের স্বার্থে ২ কোটি ৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কৃষিপণ্য সহযোগী কার্ড কৃষকদের মাঝে বিতরণ, সারের ওপর ভর্তুকি, ২০০৯-১০ সাল থেকেই কৃষিঋণের অর্থ বিতরণে স্বচ্ছতা আনয়ন ও সহজতর করতে ১০টাকার বিনিময়ে কৃষকদের ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করাসহ সরকার কৃষিবান্ধব বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। কৃষকদের সহায়তার জন্য গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে সাধারণ তহবিল গঠনের উদ্দেশ্যে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আরও উন্নত সমন্বয় সাধনের স্বার্থে দেশব্যাপী কৃষকদের মাঝে নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা শক্তিশালী ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও বাংলাদেশে খাদ্যাভাব পরিলক্ষিত হয়নি। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকার ২০১৬ থেকে ২০২০ মেয়াদে দ্বিতীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। এ উদ্দেশ্যে খাদ্য নিরাপত্তা আইন-২০১৩ সহ অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ আইন সংসদে পাস হয়েছে, যেগুলো কৃষিখাত উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখছে।
ডক্টর কে কাস্তুরিরঙ্গনের সভাপতিত্বে ও স্মৃতি বেসনেটের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ভারতের প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও অর্থ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রেম দাস রায়, সংসদ সদস্য ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট, উদ্যোগ এবং পানি সম্পদ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাজিব প্রতাপ রুদি, ধরিত্রি বিজ্ঞান, জিওআই, নয়া দিল্লি-র সচিব এম. রাজিভন, ফাউন্ডেসন ফর ইকোলোজিকাল সিকিউরিটির প্রধান নির্বাহী জগদ্বিশ রাও পুপালা, জল ভাগিরথি ফাউন্ডেশননের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট্রি ও চিফ ফাংশনারি পৃথ্বি রাজ সিং, ভুটানের কৃষি ও বন মন্ত্রী লিউনপো ইয়াশেই পেনজর, জাতীয় মৃত্তিকা সেবা কেন্দ্রের পরিচালক কর্ম দেমা দর্জি, ভুটান ট্রাস্ট ফান্ড ফর এনভায়রনমেন্টাল কনভার্সেশনের প্রাক্তন পরিচালক পেমা চয়েপায়েলসহ বিভিন্ন দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
Leave a Reply