বরিশালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ইউএনওর বাসভবনে অবৈধপ্রবেশের ঘটনায় সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র কোনো অপরাধ থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ (মেয়রের বাবা) বললে তিনি প্রয়োজনে পদত্যাগ করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত রাত ১টার দিকে বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাতের ভাই সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেয়রের উক্তিতে তিনি লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও আমার বাবা আছেন। তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, আমি আমার রেজিগনেশন লেটার দিয়ে দেবো।’
এর আগে বুধবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টার দিকে মেয়র তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার পিতা বললে পদত্যাগ করবেন। ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে হলেও পদত্যাগ করবেন। এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকালে মেয়রের বাসায় অভিযান চালাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। প্রায় এক ঘণ্টা সেরনিয়াবাত ভবনের আশপাশে পুলিশ, ডিবি ও র্যাব সদস্যরা অবস্থান নিয়ে চলে যান। ওইদিন দুপুরে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, তারা মেয়রের বাসভবনে অভিযান চালাতে গিয়েছিলেন।
বিকেলে ওসি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে ২৮ জন নামধারী ও অজ্ঞাত ৮০ জনের বিরুদ্ধে বাসভবনে হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা চালানো হয় সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশে।
এর প্রতিবাদ করায় তার বাসায় হামলা চালায় দলীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়া ৯৪ জন নামধারী ও ৪০০ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, মারধর, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় মামলা করেন কোতোয়ালি থানার এসআই শাহজালাল মল্লিক। উভয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে।
এছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ছাত্রলীগ নেতা, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে বরিশালে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই রাতে সদর উপজেলা ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। এ সময় গুলির ঘটনায় আহত হন অনেকে।
Leave a Reply