জনবল সংকটের কারণে বিগত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পওে চালু হতে যাচ্ছে মালঞ্চি রেল স্টেশন স্টেশনিটিতে চালু হলে বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলার অসংখ্য মানুষ ট্রেন চলাচলের সুবিধা পাবে।
জানা গেছে, জেলার বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত মালঞ্চি রেল স্টেশন। রাজধানীসহ দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে ১৯২৭ সালে নির্মিত হয় এই স্টেশনটি। এরপর থেকে এর সুবিধা ভোগ করে আসছিল উপজেলাবাসী। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে ২০১৩ সালে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়। টিকিট কাউন্টার, স্টেশন মাস্টারের কক্ষ ও এবং যন্ত্রপাতির অবস্থা বেহাল দশায় পরিণত হয়। স্টেশন মাস্টার বিহীন স্টেশনে চারটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবহার উপযোগী মাত্র দুইটি। বর্তমানে নাটোর ও আব্দুলপুর রেলওয়ে জংসন থেকে এই স্টেশনের সিডিউল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অধিকাংশ সময় পার্বতীপুর থেকে রাজধানী ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতকারী ট্রেনসহ লোকাল ট্রেনকে নাটোর ও আব্দুলপুর রেল স্টেশনে সাময়িক বিরতি রেখে সিডিউল ঠিক রাখতে হচ্ছে। এতে করে সময় বেশি লাগে এবং যাত্রীদের ভোগান্তির কারণ হয়। এই স্টেশনে লোকাল ট্রেনের সকল শ্রেণীপেশার যাত্রীদের উঠানামা করতে স্থানীয়দের উদ্যোগে মই ব্যবহারের চিত্র দেখা গেছে। স্টেশনটির কয়েক মিটার পশ্চিমে বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ অবস্থিত। বাগাতিপাড়া উপজেলায় রয়েছে কাদিরাবাদ সেনানিবাস, বাউয়েট বিশ্ববিদ্যালয়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সেনাসদস্যসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং এলাকার সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্টেশনটির পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে তৎপর স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি। সম্প্রতি তিনি সংসদে বাগাতিপাড়ার অন্তর্গত মালঞ্চি রেল স্টেশন সংস্কার ও চালুর দাবি জানিয়ে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন। পরে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালঞ্চি রেল স্টেশন সংস্কার ও চালুর জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন।
নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, উপজেলার বিভিন্ন গুরুদ্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলাবাসীর যাতায়াতের কথা বিবেচনায় নিয়ে সংসদে স্টেশনটি চালুর দাবি জানাই। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেশনটি সংস্কার ও চালু করার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়ে উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি পূরণ করেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা উপজেলাবাসী কৃতজ্ঞ। বর্তমানে সংস্কার কাজ পুরোদমে চলমান আছে। দ্রæত সময়ের মধ্রে স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী’র (পশ্চিমাঞ্চল) মহাব্যস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, দীর্ঘ ২৫ বছর রেলে বিভিন্ন পদে নিয়োগ না হওয়ায় জনবল সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নতুন নতুন ষ্টেশন নির্মিত ও চালু হচ্ছে। জনবল সংকট নিরসনে ইতোমধ্যে শুধু ১৬৭ টি রেল স্টেশন মাস্টার পর্যায়ের জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণ চলছে। যেহেতু জনবল নিয়োগ রেলওয়ে বিভাগের জন্য একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া যা পরিচালনা করা রেলওয়ের জন্য অনেক কঠিন। তবে ধীরে ধীরে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের আওতায় জনবল বাড়ানোর কাজ চলমান রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, মালঞ্চি রেল স্টেশন সংস্কার ও জনবল নিয়োগের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রæততম সময়ের মধ্যে স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হবে।
Leave a Reply