চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত প্রত্যেক শ্রমিককে তিন কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আহত শ্রমিকের দিতে বলা হয়েছে এক কোটি টাকা করে।
মানবাধিবার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন এ নোটিশ পাঠান।
ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা দিতেও বলা হয়েছে।
সাত দিনের মধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে নোটিশ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
মেইল এর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইনসচিব, শিল্পসচিব, বাণিজ্যসচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ ১৭ জনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নোটিশকারী আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।
শনিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাঁচ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকেই।
নিহতরা হলেন আহমদ রেজা, রনি হোসেন, মো. শুভ, মো. রাহাত ও মো. রায়হান।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে তিন লাখ টাকা করে ও আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ও এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ শনিবার গভীর রাতে দুটি মামলা করেছে।
ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো ও এইচটিজির চুক্তি হয়। ২০১৭ সাল থেকে গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমিতে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।
চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের বক্তব্য, এতে গ্রামের পরিবেশ দূষিত হবে। আরেক পক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।
এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তা নিয়ন্ত্রণে যায় পুলিশ। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন।
Leave a Reply