‘গৌরবময় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনটিকে সরকার সংকীর্ণভাবে ও দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উদযাপন করেছে’- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ দেশের ২০ নাগরিকের এ বিবৃতির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘যে ২০ জন বিবৃতি দিয়েছেন, তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলতে আমার লজ্জা হচ্ছে’।
রোববার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ ২০ বুদ্ধিজীবী যে বিবৃতি দিয়েছেন, সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী- জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিবৃতিটি দেখেছি। যে ২০ জন বিবৃতি দিয়েছেন, তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলতে আমার লজ্জা হচ্ছে। তাদের উচিত ছিল, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন যারা ধর্মের নামে হাঙ্গামা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতি দেওয়া।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি সম্পত্তিতে, ভূমি অফিস ও রেল স্টেশন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং থানায়, মানুষের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে, স্বাধীনতা দিবস পালন না করে যারা এসব করেছেন তাদের সমালোচনা না করে বরং তাদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার পর তারা আর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বলে দাবি করতে পারেন না। তারা আর টেলিভিশনের পর্দায় গিয়ে সুশীল বলে দাবি করতে পারেন না। তারা উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে গেছেন। তাই তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলতে আমাদের লজ্জা হচ্ছে।’
‘২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন না করে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলা করেছে, তারা সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, কারণ কেন নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আসলেন? ভারত মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে ভারতের সেনাবাহিনী আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এক হয়ে তাদের রক্ত ঝরিয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেসময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি করতে এক দেশে থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কোনো দলের নেতা হিসেবে নয়। তিনি বাংলাদেশে কোনো দলের নেতা হিসেবে আসেননি, সে হিসেবে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি এসেছেন সেজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কি ইসলামিক দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে কি না- জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যেকোনো নৈরাজ্য দমনে বদ্ধপরিকর। কারণ সরকারের দায়িত্ব সরকারি সম্পত্তি ও জনগণের সম্পত্তি রক্ষা করা। সুতরাং আজ যারা এই কাজগুলো করছেন, সরকারের দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য রাষ্ট্রের শান্তি, স্থিতি এবং সম্প্রীতি রক্ষার জন্য তাদের দমন করা। সরকার অবশ্যই এটি কঠোর হস্তে দমন করবে।’
Leave a Reply