বেপরোয়া শিক্ষকের গণপিটুনিতে কয়েক জন শিক্ষার্থী গুরুত্বর অসুস্থ হয়েছে বলে জানা যায়। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনিশা(১১) নামে ৫ম শ্রেনির এক শিক্ষার্থী হাত ভেঙে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আনিশা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আবাদ চন্ডিপুর (বনবিবি তলা) গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে।সে ১০৩ নং সেন্ট্রাল আবাদ চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী। আহত শিশুটির পিতা আবুল হোসেন বলেন, আমি বাড়িতে আসার কিছুক্ষণ পর মেয়ে এসে কাঁদতে থাকে। তার কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে স্যার আমাকে মেরেছে আমার হাতে প্রচুর যন্ত্রণা হচ্ছে আমি সহ্য করতে পারছি না। অবস্থা বেগতিক দেখে আমি তাৎক্ষণিক স্থানীয় ডাক্তার অনিমেষ এর সহযোগিতা নেই ডাক্তার দেখে আমাকে বলেন, অবস্থা আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে আপনি ভাল ডাক্তার দেখান। পরবর্তীতে আমি শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার হাতের এক্সে করানোর কথা বলেন। এক্সে রিপোর্টে দেখা যায় তার বাম হাতের কব্জির দুইটা হাড় ভেঙে গেছে। এখন আছি বিভিন্ন হুমকি ধামকিতে অভিযুক্ত শিক্ষককের বড় ভাই স্থানীয় মেম্বার হওয়ায় বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন একে তো মেয়েকে মারার কোন বিচার পাচ্ছি না, অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছি। আনিশার মা শাহানা পারভীন বলেন, আমি এই স্কুলের বিদ্যুৎসাহী সদস্যা হিসাবে বিগত দিনে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক এস এম শহিদুল ইসলামকে একই অপরাধে বার বার সতর্ক করেছি। কিন্তু তিনি স্থানীয় হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির কোন কথাই তোয়াক্কা করেন না।
একই দিনে ঘটে যাওয়া অন্য শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা জানান, এই খ্যাপা শিক্ষকের এটা কোন নতুন ঘটনা নয়, অভিযুক্ত শিক্ষক আগে থেকেই বেপরোয়া। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এস এম শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করতে এসেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। আমি বাচ্চাদের ক্লাসে যেতে বলেছিলাম কিন্তু কেউই কথা শুনছিল না তাই আমি লাঠি দিয়ে কয়েকজন মেয়েকে মেরেছি। তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে আমি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ডান হাতে ব্যথা পেয়েছি এখনো ব্যান্ডেল দেয়া আছে। বাম হাত দিয়ে মেরেছি তাতে এমন ঘটনা ঘটার কথা নয় স্থানীয় শত্রুতার স্বীকার হচ্ছি আমি।প্রধান শিক্ষক সৌভিক রায় বলেন, ঘটনার দিন ১ লা আগষ্ট সোমবার আমি মাসিক মিটিংয়ে ছিলাম।পরে শুনেছি বিষয়টা দুঃখজনক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।উপজেলা সহকারী শিক্ষা প্রাথমিক অফিসার রমিজ মিয়া বলেন, দুইদিন আগের ঘটনা, আমি জেনেছি আজ। প্রধান শিক্ষককে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে বলেছি। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
Leave a Reply