কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই অবশেষে ভাসানচরে পৌঁছালেন নারী-পুরুষ-শিশুসহ ১৬৪২ জন রোহিঙ্গা। শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে তারা ভাসানচরে পৌঁছান। এরআগে, কক্সবাজারের উখিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় নৗ এবং সেনাবাহিনীর সাতটি জাহাজ ।
ভাসান চরের একটি সুত্র জানান, ভাসানচরে আসা সকল রোহিঙ্গাদের প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তারপর ওয়ার হাউজে নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের ব্রিফিং করবে। ব্রিফিং শেষে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুত রাখা ৭, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ক্লাষ্টারে তাদেরকে রাখা হবে। সূত্র আরো জানান, আগামী প্রায় এক সপ্তাহ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদেরকে রান্না করে খাওয়ানো হবে। ভাষানচরে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে রয়েছে ৮১০ শিশু, পুরুষ ৩৬৮ ও নারী ৪৬৪জন। এছাড়া ২২টি এনজিও রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিতে ভাসানচরে অবস্থান করছে।
শুক্রবার সকালে দীর্ঘ হুইসেল বাজিয়ে একে একে জেটি ত্যাগ করে রোহিঙ্গাবাহী নৌ এবং সেনাবাহিনীর সাতটি জাহাজ। অবশ্য এরআগে লাইন ধরে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব জেটি থেকে ভাসানচর যাত্রার জাহাজে ওঠেন রোহিঙ্গারা। তাদের চোখে মুখে অনেকটা বিস্ময়ের ঘোর। আর জাহাজে উঠে তো অবাক হওয়ার শেষ নাই।
রোহিঙ্গা জানান, আমরা নিজেদের ইচ্ছায় এখানে এসেছি, প্রধানমন্ত্রী নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন তাই খুশি হয়েছি। ছেলে মেয়ের পড়াশুনা ও ভালো থাকার জন্য এখানে এসেছি।
ক্যাম্পের একঘেঁয়ে জীবন আর ভালো লাগছিল না রোহিঙ্গাদের। তাই উন্নত জীবনের আশায় বাংলাদেশ সরকারের আশ্বাসে তাদের ভাসানচরে আসা। এক রোহিঙ্গা নারী জানান, খুব ভাল লাগছে, অনেক আনন্দের সাথে আমরা এখানে এসেছি।
যাত্রা পথে যেমন খাবারের ব্যবস্থা ছিলো, তেমনি নিরাপত্তায় পুরো সাগর পথে ছিলো নৌ বাহিনীর জোরদার টহল ব্যবস্থা। নতুন আশ্রয়স্থলকে এখন ভরসাস্থল হিসাবেই দেখছেন রোহিঙ্গারা।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ভাসানচরের পরিবেশটা ভালো, থাকার ব্যবস্থাও ভালো। সেখানে মাছ চাষ, কৃষি কাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য সবই করতে পারবে রোহিঙ্গারা। তাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে পড়াশুনা করতে পারবে। ভাসানচরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের আধুনিক জীবন-মান উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সব ব্যবস্থা।
Leave a Reply