রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মার্কেটটি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
সেলিম রেজা বলেন, ‘মার্কেটে আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
মার্কেট-সংলগ্ন ফুটপাতে অনেক অবৈধ দোকান ছিল বলে উল্লেখ করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
সেলিম রেজা বলেন, ‘আমরা মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করছি। সিটি করপোরেশন তাঁদের (ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী) পাশে দাঁড়াবে। যতটুকু সম্ভব ডিএনসিসির পক্ষ থেকে তাঁদের সহযোগিতা করা হবে।’
পরে ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তার চেষ্টা করা হবে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার মধ্যে মার্কেটে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ করে। সঙ্গে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর বিশেষ দল। আজ সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মার্কেটে অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়েরও কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফুটপাত-সড়কে অবৈধ দোকান থাকাসহ উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। আগুন নেভানোর পানি অন্য জায়গা থেকে আনতে হয়েছে।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ফায়ার সার্ভিস বলে হয়েছে, মার্কেটের ভেতরে পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আগেই দোকান মালিক সমিতি-ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেলিম রেজা বলেন, ‘এখানে সমিতি আছে। তাদের আমরা এই কাজগুলো (অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা) করার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছি, অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজগুলো তারা না করায় এখন আমরা এমন ভয়াবহ অবস্থা দেখতে পাচ্ছি।’
মালিক সমিতি ও ব্যবস্থাপনা কমিটি দায় তদন্তের মাধ্যমে জানা বলে মন্তব্য করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
মার্কেটটি কেন ডিএনসিসির অগ্নি-ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট-ভবনের তালিকায় ছিল না, এমন প্রশ্নে সেলিম রেজা বলেন, ‘কমিটি যখন কাজ করেছে, তখন মার্কেটটি তালিকায় ঢোকেনি। আমাদের যেসব ভবন ও মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলোর ব্যাপারে ১৫ দিন বা এক মাসের মধ্যে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে জন্য আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে দিয়েছি। কোনো বাধা, কোনো কিছুর মুখেই আমরা আর থামব না।’
কয়েকজন ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, গতকাল দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে প্রথমে কৃষি মার্কেটের খ-ব্লকে আগুন লাগে। ব্লকটিতে মুদি পণ্য ও স্টেশনারি পণ্যের দোকান রয়েছে। পরে পশ্চিম পাশের গ-ব্লকেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গ-ব্লকে কাপড় ও গয়নার দোকান রয়েছে। এই ব্লকে আগুন লাগার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
Leave a Reply