বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে ‘বাধ্য করতে হবে’ বলে অভিমত দিয়েছে সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (সিএফআইএসএস)।
‘মানবিক আদর্শ, জাতীয় নিরাপত্তা ও বাংলাদেশের রোহিঙ্গা নীতি’ শীর্ষক গেল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির চতুর্থ ওয়েবিনারে বক্তারা এমন অভিমত দেন।
স্বাগত বক্তব্যে কমডোর (অব.) আবছার বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার তার পক্ষে যতটুকু সম্ভব, তা করেছে। কিন্তু এত বিশাল এক জনসংখ্যা, যা এমনকি পুরো ভুটানের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি, এর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্ব বাংলাদেশের পক্ষে নেয়া আর সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এ পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক মহল থেকে যে প্রশংসা এসেছে, তা অবশ্যই আমাদের পররাষ্ট্রনীতির সাফল্যকে প্রতিফলিত করে। কিন্তু সময় এসেছে, এই মহলকেই এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে।’
এই উদ্দেশ্যে তিনি সামগ্রিক চিত্রটি সব দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে একটি টেকসই সমাধানে আসার আহ্বান জানান।
ওয়েবিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আলী আশরাফ একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। এতে তিনি শরণার্থী গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাগতিক স্বাগতিক দেশগুলোর শরণার্থী নীতিমালায় মানবিক আদর্শ ও জাতীয় নিরাপত্তা- এ দুটি বিষয়ের ভারসাম্য যাচাই করেন এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারটি বিবৃত করার চেষ্টা করেন।
ড. আশরাফ বলেন, ‘এই পর্যায়ে বাংলাদেশের জন্য একমাত্র সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন। ২০১৭ সালে বৃহদাকারে শরণার্থী প্রবেশ ও তাদের আশ্রয় প্রদানের পেছনে মানবিক দিকটি ছাড়াও ধর্মীয় সম্প্রীতি, আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপ, ভূ-কৌশলগত ইত্যাদি বিষয় কাজ করা সত্ত্বেও এখন আমাদের অনুধাবন করতে হবে, আমাদের সাহায্য প্রদানের সামর্থ্য আর নেই।’
তিনি বলেন, ‘এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দায়িত্ব যে কোনো মূল্যে কূটনৈতিক চাপ তৈরি করে মিয়ানমারকে তাদের মানুষদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করা।’
Leave a Reply