লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা চলাকালে পুলিশ-আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে সজীব নামে এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তার বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। নিহত সজীবের বাড়ি সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ এলাকায়। মঙ্গলবার বিকেল সাবেক এমপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর বাসার সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের সামাদ মোড় সংলগ্ন কলেজ রোডের পুকুর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের লাশ সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
এদিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমাহল এলাকা, রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতাল, মটকা মসজিদ এলাকায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত ২০০ জনের বেশি লোক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অনেকের গায়ে গুলি লেগেছে। তাদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা আধুনিক হাসপাতাল ও সেতুবন্ধন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর করে। বিক্ষুব্ধদের লক্ষ্য করে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
স্থানীয় লোকজন জানান, লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা চলাকালে শহরের সামাদ মোড়ে আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় সজীব নামে ওই যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। প্রাণে বাঁচতে তিনি কলেজ সড়কের মদিনউল্যা হাউজিংয়ের পাশের ফিরোজা টাওয়ার নামে একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নেন। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এদিকে পদযাত্রা চলাকালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়েছেন পুলিশসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল এবং রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। অন্যদিকে পুলিশও টিয়ারসেল এবং রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় পুলিশের সাথে যোগ দেয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা। ফলে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রূপনেয়। এ ঘটনায় ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা এবং রামগতি সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহতদের অনেকের গায়ে গুলি লেগেছে।
ঘটনার পর থেকে শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, নিহত সজীব যুবদলের কর্মী। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়া পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় আমাদের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, কীভাবে সজীবের মৃত্যু হয়েছে সেটি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। এখনই এ বিষয়ে বলতে পারব না। বিএনপি তাদের পদযাত্রা থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ আত্মরক্ষা ও জানমাল রক্ষায় টিয়ারসেল এবং রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় পুলিশের ২৫-৩০ জন আহত হয়েছে ।
Leave a Reply