হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পুজা (কালী) ও দেশের সর্ব বৃহৎ কালী প্রতিমা রবিবার (১২ নভেম্বর) শুরু হবে।
কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়ের আশায় মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ঐতিহাসিক, ইতিহাস ও ঐতিহ্য মন্ডিত লালপুরের ৫৩৪তম কালী পূজা ও মেলা ব্যপক নিরাপত্তা, আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উপজেলার বুধপাড়া কালী মন্দিরে নয় দিন ব্যাপী কালী মেলা রবিবার (১২ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে শুরু হবে। দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শকের পদচারণায় জমে উঠা সপ্তাহব্যাপী মিলন মেলা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
প্রবীণ ভক্ত শ্রী আনন্দ কর্মকার ও সেবাইত শ্রী উত্তম কুমার জানান, ৫৩৪ বছর আগে নবাবী আমলে বর্গীয় হাঙ্গামার সময় বর্গীদের অত্যাচারে ভারতের মুর্শিদবাদ জেলার বহরমপুরের খাগড়া থেকে ৬০ ঘর কংস বণিক লালপুরের বুধপাড়ায় এসে বসতি স্থাপন করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের এই কাঁসা শিল্পীরা কালী পূজা অর্চনার জন্য খড়ের ঘরে একটি মন্দির নির্মান করে। বাংলা ১৩৩২ সালে জনৈক লাল কেনেডিয়ার স্ত্রী জানকী বাঈ-এর আর্থিক অনুদানে বর্তমান পাকা মন্দিরটি নির্মিত হয়। প্রতি বছর কার্তিক মাসে এখানে কালী পূজা ও সপ্তাহ ব্যাপী মেলা চলে।
মন্দির কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শতদল কুমার পাল ও সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার জানান, পঞ্চাশ বছর আগে এই মেলা এক মাস ধরে চলতো। মন্দিরে সকাল-সন্ধা আরাধনা, পূজা অর্চনা, হরিবাসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান সারা বছর অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রী গণেশ চন্দ্র দাস জানান, পাক-ভারত উপ মহাদেশের প্রাচীনতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম এই মন্দিরে পূজা চলাকালীন প্রতিদিন শতাধিক পাঁঠা বলি হয়ে থাকে।
প্রতিমা নির্মাতা শ্রী সুকুমার চন্দ্র হালদার ও সনজিত কুমার হালদার জানান, কালী মূর্তিটির উচ্চতা ৩৩ ফুট। এটিই দেশের সর্ব বৃহৎ কালী প্রতিমা।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দীপেন্দ্র নাথ সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী সৌমিত্র কুমার সরকার বলেন, সুষ্ঠভাবে পূজা উদযাপনে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা জানান, নির্বিগ্নে পূজা উদযাপন এর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ উজ্জ্বল হোসেন জানান, সুন্দর ও সুষ্ঠু উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন এর সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply