লালমনিরহাটের পাটগ্রামে আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন ডিসি আবু জাফর। তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ৩ দিনের সময় দিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মহন্ত জানান, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এবং ঘটনার ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মোটামুটি কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে সংখ্যাটা বলছি না।
এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন হিসাবে চিহ্নিত কয়েকজনের নাম দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো, অগ্নিসংযোগ এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে তিনটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরো জানান, মরদেহ পোড়ানোর কারণে দেহাবশেষ যেটুকু পুলিশ উদ্ধার করেছে, তার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই দেহাবশেষ শনিবার নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজব থেকে জুয়েলকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সুলতান যোবাইয়ের আব্দার নামে এক বন্ধুকে নিয়ে বুড়িমারী বেড়াতে আসেন জুয়েল। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা। নামাজ শেষে মসজিদের সানসেটে রাখা কোরআন শরীফ পড়তে গিয়ে নামাতে যান। এ সময় অসাবধানতাবশত কোরআন ও হাদিসের বই তার পায়ে পড়ে যায়। পরে তিনি তুলে চুম্বনও করেন। বিষয়টি নিয়ে জুয়েলের সঙ্গে মুয়াজ্জিনের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আশপাশের লোকজন ছুটে এসে জুয়েল ও সুলতান যোবাইয়েরকে পাশে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে।
পরে পুরো বুড়িমারী বাজারে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা-জানালা ভেঙে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
লালমনিরহাটের এসপি আবিদা সুলতানা জানান, তদন্তে ঘটনার সঠিক কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নিহতের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের কয়েকজন।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জুয়েল রংপুর শহরের শালবন রোকেয়া সরণি এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান ছিলেন। তার বড় মেয়ে জেবা তাসনিম এবার এইচএসসি পাস করেছেন। ছেলে তাশিকুল ইসলাম ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র
Leave a Reply