শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্য ও একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্বে সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানা জমিতে জোর করে বালু ভড়াট করছে অনুমোদনহীন মেরিন গ্রুপ নামে একটি হাউজিং কোম্পানী। জোর করে বালু ভড়াটকে কেন্দ্র করে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কেয়টখালী এলাকায় এখন জুলুমের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। কেউ বাধা দিতে আসলেই তাদের উপরে নেমে আসছে অত্যাচারের খরগ। এমতাবস্থায় বাপ-দাদার ভিটে মাটি হারানোর আশঙ্কায় সাধারণ মানুষের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুলতান মেম্বার ও কেয়টখালী গ্রামের মকদম এবং জুলহাস হাওলাদারের নেতৃত্বে মেরিন গ্রুপের জন্য সরকারী ভিপি কেসের সম্পত্তি, রেলওয়ের একোয়ারকৃত জমি, ব্যক্তি মালিকানার বসত বাড়ি, জমি ও পুকুরে জোর পূর্বক বালু ভড়াট চলছে। ভরাটকৃত জায়গায় বেশ কয়কটি বড় আকারে মেরিন গ্রুপ নামে সাইবোর্ড সাটানো হয়েছে। সাংবাদিকদের দেখে এসময় এগিয়ে আসেন ভূক্তভোগী সাইফুল ইসলাম, সবুরজান বেগম, মিজানুর রহমানসহ আরো বেশ কয়েকজন। তারা বলেন মেরিন গ্রুপ তাদের মালিকানা জায়গাসহ পুকুরে বালু ভরাট করছে। এতে তারা বাঁধা প্রদান করলে স্থানীয় মকদম ও জুলহাস সহ একটি মহল তাদেরকে বিভিন্নভাবে জুলুম অত্যাচার করছে। ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, দিনে বাধা দিলে রাতের আধারে ভিন্ন রুপে হয়রানী শুরু হয়।
গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মেরিন গ্রুপের হয়ে মকদম হাওলাদার (৫০),জুলহাস হাওলাদার(৫৫) ও মোঃ রুবেল সহ বেশ কয়েকজন মিলে ওই এলাকার রুহুল আমিনদের জমিতে জোরপুর্বক বালু ভরাট শুরু করে। এসময় মকদম ও জুলহাসের পালিত বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আর্তকিতে রুহুল আমিনের উপর হামলা চালায়। এতে রুহুল আমিন গুরুতর আহত হয়। পরে এলাবাসি তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এঘটনায় শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মেরিন গ্রুপের লিগ্যাল এ্যাডভাইজার বিদ্যুৎ কুমার মজুমদারের কাছে সরকারী জমি সহ জোর পূর্বক বালু ভড়াটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা দখল সূত্রে ক্রয় কৃত জমিতে বালু ভরাট করছেন। স্থানীয় ভূক্তভোগীদের অভিযোগ সমন্ধে তিনি বলেন, তাদের জায়গা আমরা বালু ভরাট করিনি। তবে যেসব মালিকানা জমিতে বালু পরেছে সেখান থেকে বালু সরিয়ে নেওয়া হবে। একাজে মেরিন গ্রুপের কোনও অনুমোদন আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব কাজের পারমিশন চেয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করা হয়েছে । এখনো কোন অনুমোদন মিলেনি। তবে তাদের পালিত বাহিনী দিয়ে হয়রানীর প্রশ্নে তিনি কোন মুখ খুলতে রাজি হননি।
জোর করে বালু ভড়াটের সন্ত্রাসী বাহীনির সদস্য মকদমের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকার বিনিময়ে মেরিন গ্রুপের হয়ে কাজ করেন বলে স্বীকার করেন। এব্যাপারে জুলহাসের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বালু ভড়াটের নেতৃত্ব ও ড্রেজারের মালিকানার প্রশ্নে ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুলতান মেম্বার বলেন, শ্রীনগর উপজেলার একজন ইউপি চেয়ারম্যান আমাদেরকে ড্রেজারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা চুক্তিতে বালু ভড়াট করি। বালু কার জায়গায় পরল তা আমাদের দেখার বিষয় না।
শ্রীনগর থানার ওসি(তদন্ত) হেলাল উদ্দিন বলেন, মারাধরের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার বলেন, বিধি মোতাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেয়া দেবনাথকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply