নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত দোষীদের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবার।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সহিদ উদ্দিন এস্কান্দার কচি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের বড় ভাই নুরউদ্দিন বলেন, ‘ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বারবার আমাকে বাঁচান, প্লিজ ভাই আমাকে বাঁচান বলে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলো মুজাক্কির। কিন্তু উপস্থিত পুলিশ, রাজনৈতিক কর্মী কেউই তাকে বাাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘নিজ এলাকায় এভাবে আমাদের স্নেহের ছোট ভাই ও আপনাদের সহকর্মী বস্তÍনিষ্ঠ সংবাদের জন্য জীবন দেবে তা ভাবতেই আমাদের শরীর শিউরে ওঠে। আমার ভাইয়ের বুক ও গলা বুলেটের আঘাতে ঝাঝরা হয়ে গিয়েছিলো তা ইতিহাসের সকল নির্মমতাকে হার মানায়।’
এসময় তিনি মুজাক্কিরের বিভিন্ন সামাজিক, মানবিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকার কথাও উল্লেখ করেন। মুজাক্কির হত্যার ঘটনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় দেশের সকল গণমাধ্যম পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা জানান।
মুজাক্কিরের বাবা নোয়াব আলী মাস্টার বলেন, ‘আমার ছেলে শুধু পড়ালেখা ও সাংবাদিকতাই করতো না, সে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতো।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘আপনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচার করেন তাহলেই আমাদের চাওয়া পূরণ হবে।’
কান্না জড়িত কণ্ঠে মুজাক্কিরের মা মমতাজ বেগম দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। তিনিও ছেলেকে হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের বাবা, মা, বড় ভাই, বোনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মেয়র কাদের মির্জার ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এসময় সাংবাদিক মুজাক্কিরও গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাবা নোয়াব আলী মাস্টার অজ্ঞাত একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
Leave a Reply