স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও দেশে ভোটাধিকার না থাকা জাতির জন্য কলঙ্কজনক বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত মজলিসে আমেলার সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছিল ভোটাধিকারের প্রশ্নে। ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলনই স্বাধীনতা আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। এক সাগর রক্তের নিবিময়ে অর্জিত সেই স্বাধীনতার ৫০তম বছরে এসেও বাংলার মানুষ ভোটের অধিকার বঞ্চিত এর চেয়ে কলঙ্কজনক বিষয় আর কী হতে পারে?’
তিনি বলেন, লজ্জাজনক বিষয় হলো, যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীনতা এসেছিল, সেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাতেই ভোটাধিকার হরণ হয়েছে। এটা আওয়ামীলীগের জন্য লজ্জাজনক।
চরমোনাই পীর বলেন, বৈষম্য, অবিচার, রাজনৈতিক অস্থিরতা, শাসন পদ্ধতির অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা ও ইসলামী অনুশাসনের অভাবের প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার দাবি উঠেছিল বাঙালির চেতনায়। দুর্ভাগ্যজনক হলো, ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশ একই অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। বিগত বছরগুলোতে যারা দেশ শাসন করেছে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুলি তোতাপাখির মতো আউড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার প্রতি পাকিস্তানী শাসকদের মতো অবজ্ঞা, উপেক্ষা করেছে এবং নিজেদের আখের গুছিয়েছে। ফলে গুণগত মানের দিক থেকে বাংলাদেশ স্বাধীনতার আগের মতোই থেকে গেছে। শাসনক্ষমতায় গণ মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি।
রেজাউল করীম বলেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ স্বীকৃত কোনো পন্থা নেই, বিচার বিভাগ কার্যত পরাধীন, আমলাতন্ত্রে সরকারি প্রভাব, রাজনৈতিক সহ-অবস্থানের অভাব, নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম, মতামত প্রকাশে বাধা ইত্যাদি সকল নাগরিক বিষয়াবলিতেই কোনো ধরনের গুণগত পরিবর্তন আসেনি।’
ভ্যাকসিন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের অদূরদর্শিতায় এবং ভারত তোষণনীতির কারণে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ অনিশ্চয়তা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে বিকল্প পথ খুঁজতে হবে।
রেজাউল করীম বলেন, ‘ভ্যাকসিন কিনতে গিয়ে সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চুক্তি করায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যা কারো কাম্য হতে পারে না।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন- দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার গোলাম মাওলা ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. আক্কাস আলী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাদের, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমানসহ অন্যরা।
Leave a Reply