করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে খুলনায় আশংকাজনক হারে বেড়েই চলছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এদিকে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমনের এক বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও হাসপাতালটিতে এখনও স্থাপন করা সম্ভব হয়নি অক্সিজেন প্লান্ট। নির্ধারিত অক্সিজেন প্লান্টটি খুমেকের অদূরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জরুরি অবস্থায় এ ধরনের কাজ ফেলে রাখা দুঃখজনক। এতে করে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বৈরিতা সৃষ্টি হয়। চিকিৎসাসেবা প্রদানকারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েন; ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, ভর্তি রোগীদের অধিকাংশেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এত রোগীকে একসঙ্গে সিলিন্ডারে অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয় না। লিকুইড (তরল) অক্সিজেন প্ল্যান্ট না থাকায় নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জিল্লুর রহমান বলেন, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তরল অক্সিজেন প্লান্ট না থাকায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১টি হাই ফ্লো নেইজল ক্যানুলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দেওয়া হয়। এর বাইরে সরকারিভাবে আরও চারটি নেইজল ক্যানুলা হাসপাতালকে দেওয়া হয়।
খুলনার করোনা প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা টেকনিক্যাল কমিটির সার্বিক সমন্বয়ক ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে, যা ধীরে ধীরে আরো প্রকট হচ্ছে। অক্সিজেন প্যান্ট স্থাপন না হওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় সময় পার করছেন চিকিৎসকরা।
তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র কয়েকটি দপ্তরের সমন্বয়হীনতা ও অবহেলার কারণে এই প্ল্যানটি স্থাপন হয়নি এবং নির্ধারিত প্লান্টটি চরম অবহেলায় রয়েছে।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ভিআই অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের জন্য আমরা বারবার তাগাদা দিচ্ছি। তাছাড়া হাসপাতালের লিকুইড অক্সিজেন প্লান্টের সক্ষমতা দ্বিগুণ করতে আট মাস আগে প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু কোনো কিছুর প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা রোগীদের সর্বাত্মক সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এ অবস্থায় অক্সিজেনের ভিআই ট্যাংক স্থাপন জরুরি।
উল্লেখ্য, খুলনা কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাসের) সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধের লক্ষ্যে গত ২৪ মার্চ (বুধবার) সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য গঠিত কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনসহ বেশ কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
Leave a Reply