কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম ধর্মীয় আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে মওদুদীবাদে বিশ্বাসী স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর সংগঠনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ নেতারা।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেন ওলামা লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতারা।
বিবৃতিতে ওলামা লীগের নেতারা বলেন, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতের কাছে ইসলাম ধর্মও নিরাপদ নয়। জামায়াত বহুকাল ধরেই কওমি মাদ্রাসাগুলোকে দখলে নেবার একটি অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কওমি মাদরাসার স্বার্থে আঘাত হানতে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে জামাত-শিবিরের নেতারা উপস্থিত হচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত সেতুবন্ধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যা দেশ-জাতি, ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য অকল্যাণকর।
বিবৃতিতে ওলামা লীগ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম নামক অরাজনৈতিক সংগঠনটি তার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। সংগঠনটিতে এখন পাকিস্তানের প্রেত্মাতা জামায়াত ভর করেছে। জামায়াত শুধু দেশের স্বাধীনতাবিরোধী-ই নয়, তারা পবিত্র ইসলাম ধর্মের বিরোধীও বটে। জামায়াত আল্লাহর নবী মুহাম্মদ (স.) এবং সাহাবায়ে কেরাম ( রা.) এর কঠোর সমালোচনাকারী।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত রাসুল (স.) ও সাহাবায়ে কেরাম বিরোধী আকিদা লালন ও মওদুদী মতবাদে বিশ্বাস করে। সেই জামায়াতের সাথে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের দেনদরবার জাতির জন্য শুভ নয়। জামাত দেশবিরোধী নীলনকশা হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে কায়েম করতে চাচ্ছে। অথচ এক সময়ে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা এই যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলাম ও ছাত্র শিবিরকে প্রতিহত করেছিল। হেফাজতের নেতারাই বলছে জামায়াত-শিবির হেফাজতের নেতৃত্ব নিতে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। জামায়াতমুক্ত হেফাজত হোক ‘অরাজনৈতিক’ সংগঠন।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘১৬ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩ দল নামীয় ব্যানারের মানববন্ধনে ‘মাস্ক লাগিয়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না’ বলে যে ফতোয়াবাজী করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অবান্তর ও মুর্খতার বহিঃপ্রকাশ। তাদের সাথে ওলামা লীগের কোনও সম্পর্ক নেই। এরা উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজারবাগী পীরের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এবং তাদের প্রধান সমন্বয়ক হচ্ছে ওই পীরের মুরিদ আল এহসান পত্রিকার সম্পাদক মাহবুব আরিফ। আমরা এ অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি অবান্তর ফতোয়াবাজী করে সরকার ও মানুষকে বিভ্রান্ত করার যে অপচেষ্টা করা হচ্ছে তার দায়ে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও সরকারের নিকট জোর দাবী করছি।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ওলামা লীগ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, মুখপাত্র ক্বারী মাওলানা আসাদুজ্জামান, যুগ্ম আহবায়ক হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন জুয়েল, মুফতী আব্দুল আলিম বিজয়নগরী, পীরে তরীকত সূফী মাঞ্জুর আহমেদ, পীরে তরীকত মুফতীয়ে আজম নজরুল ইসলাম রেজভী, মাওলানা জাকারিয়া আল কাদেরী, সুফী আব্দুল করিম, মাওলানা শহিদুল ইসলাম ও মুফতী আব্দুল কুদ্দুস ও মুফতী তৈয়বুর রহমান প্রমুখ।
Leave a Reply