সুসময়ের পদধারী নেতাদের বাদ দিয়ে দেশের সব মহানগরের দায়িত্ব যোগ্য ও পরীক্ষিতদের হাতে তুলে দিতে চায় বিএনপি। নীতি নির্ধারণী নেতারা বলছেন, শিগগিরই ১১টি মহানগর কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্ব বাছাই করবে। তবে, তৃণমূলের কর্মীরাই যাতে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে, সেই সুযোগ চান মহানগর নেতারা। ২০১৭ সালের এপ্রিলে রাজধানীকে দুই ভাগ করে দু’টি কমিটি করে বিএনপি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গেল বছরের এপ্রিলেই তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু বলেন, উড়ে এসে জুড়ে বসা, আর্থিক অবস্থান বিবেচনা, কারও সঙ্গে সুসম্পর্ক, সাময়িক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবচেনায় আসলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পল্লবী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল মল্লিক বলেন, ‘তৃণমূল থেকে যাকে নেতা নির্বাচন করা হবে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাকেই যেন নেতা মনোনিত করা হয়। এতে দল শক্তিশালী হবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল আলম বলেন, ‘এখন যারা আছেন তারা রাজনীতিতে বেশ সিনিয়র। এখন যারা নেতৃত্বে আসবেন তারা যদি ভালো করে তাহলে বর্তমান নেতাদেরই বেশি খুশি হওয়া উচিত, তাদেরই তরুণদের বেশি স্বাগত জানানো উচিত।’ এ সময় নতুন নেতৃত্বকে সকলের স্বাগত জানানোর আহ্বান জানান শেখ রবিউল আলম।
রাজধানীর বাইরের ৯টি মহানগরেও সাংগঠনিক কাজ চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই। এছাড়া কুমিল্লা মহানগরে সাংগঠনিক কমিটি না থাকায় সেখানেও প্রথমবার নতুন কমিটি করার উদ্যোগ রয়েছে।
আহ্বায়ক কমিটি গঠনের বিষয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু জানান, সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। পরে এ কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করে, এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
সময়মতো কমিটি পুনর্গঠন করতে না পারলে এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব না আসলে তৃণমূলে তার প্রভাব পড়ে বলে মনে করেন মহানগর নেতারা।
বরিশাল মহানগর বিএনপি সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘যাদের নেতা নির্বাচন করা হবে তাদের সংগ্রাম করতে হবে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ করতে হবে। যারা রাজনীতিতে সক্রিয়, দলের জন্য ত্যাগের মনোভাব আছে তাদেরই নেতা নির্বাচিত করা উচিত।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে যদি সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করা হয়। পরবর্তীতে তারা যদি কাউন্সিলের মাধ্যমে মহানগরের নেতা নির্বাচিত করে তাহলে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।’
পদের জন্য নয় দলের জন্য নিবেদিত নেতা চায় বিএনপি। এজন্য কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত নেতৃত্ব দিয়েই মহানগর কমিটি সাজানো হবে বলে জানান নীতি নির্ধারকরা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে পদ পেয়েই তার কাজ শেষ তাহলে তিনি সে পদে থাকতে পারবে না।’
কাউন্সিলের সুযোগ পেলে শুধু মহানগর নয়, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব কমিটিই গণতান্ত্রিক উপায়ে গঠন করবে বিএনপি।
Leave a Reply