যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের সম্ভাব্য মন্ত্রিসভার ছয় সদস্যের নাম ঘোষণা করেছেন। যাদের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক পদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন। এখন শুধু সিনেটের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকতে হবে ঘোষিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের।
স্থানীয় সময় সোমবার তার মন্ত্রিসভার ছয় সদস্যের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে জো বাইডেন বলেন, “আমি এমন একটি টিম নিয়ে কাজ করতে চাই, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে আমাকে সাহায্য করবেন এবং যাতে আমি বিশ্বের সামনে থাকা বৃহৎ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারি।”
দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই পদে মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন বাইডেনের দীর্ঘদিনের সহকারী ও বারাক ওবামার আমলের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যাক সুলিভান।
ব্লিংকেন ও সুলিভান দু’জনই ২০১৫ সালে জন কেরির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
বাইডেন মন্ত্রিসভায় জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরকারী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে। নির্বাচনি প্রচারাভিযানের সময়ই বাইডেন বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতা হাতে পাওয়ার প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরিয়ে নেবেন।
এছাড়া জো বাইডেনের মন্ত্রিসভায় জাতিসংঘে আমেরিকার স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক হিসেবে কোন নারীকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বাইডেন প্রশাসনে। এই বিভাগের পরিচালক হিবেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আভ্রিল হাইনেসকে। তিনি এর আগে সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ও ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে ল্যাটিন-আমেরিকান বংশোদ্ভূতকে বেছে নিয়েও ইতিহাস গড়তে চলেছে বাইডেন মন্ত্রীসভা। এ দায়িত্বে কিউবান বংশোদ্ভূত আলেহান্দ্রো মায়েরকাসকে বেছে নিয়েছেন জো বাইডেন।
এই মন্ত্রীসভা যদি সিনেটে অনুমোদন পায় তবে নিঃসন্দেহে এই দুইটি ক্ষেত্রে ইতিহাস গড়তে চলেছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে বহু জল ঘোলা করে জয়ী জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে অবশেষে সম্মত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বাইডেনের বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সার্টিফাই’ হওয়ার পরই ট্রাম্পের কাছ থেকে এমন নাটকীয় ঘোষণা এল। মিশিগানের ঘটনা ট্রাম্পের জন্য একটা বড় ধাক্কা।
ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, মার্কিন সরকারের যে সংস্থা ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি দেখভাল করে, তাদের যা করণীয়, তা অবশ্যই করা উচিত। তবে সুর নরম করলেও ট্রাম্প এখনো নির্বাচনে তার পরাজয় মেনে নেননি। তিনি তার লড়াই অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়ে বলেন, আমাদের মামলাগুলো জোর কদমে এগিয়ে চলেছে। আমরা ভালোভাবে লড়ে যাব। আর বিশ্বাস করি, আমরা টিকে থাকব।
Leave a Reply