বিএনপির সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪০ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে (আজ ২৯ মে) সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপি,অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ৩ নং চরক্লার্ক ইউনিয়নে মিলাদ ও অসহায়দের মধ্যে খাবার বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
গতরাতে পাশের একটি মাঠে খাবার রান্নারসহ প্রোগ্রামের সকল আয়োজন প্রায় সম্পন্ন হয়। কিন্তু খবর পেয়ে চর জব্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রোগ্রাম বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
এসময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও উক্ত প্রোগ্রামের সমন্বয়ক আলহাজ্ব বশির আহমেদ উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে ফোনে কথা বলে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনের সুযোগদানের জন্য অনুরোধ জানান কিন্তু ওসি সাহেব উপরের চাপ আছে বলে কোনভাবেই প্রোগ্রাম করতে দিবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং নির্দেশ অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে চরক্লার্ক
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বশির আহমেদ পুলিশের এমন আচরণে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
চরক্লার্ক ইউনিয়নের বাংলা বাজারে জিয়া স্মৃতি সংসদে অনুষ্ঠিতব্য সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান,নোয়াখালী-৪ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ শাহজাহান, বিশেষ অতিথি নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আবদুর রাহমান ,জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড. এবিএম জাকারিয়া এবং সভাপতিত্ব করার কথা ছিল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ বাবুল।
বেলা প্রায় সাড়ে ১১ টার দিকে সাবেক সাংসদ মোঃ শাহজাহান প্রোগ্রামস্থল জিয়া স্মৃতি সংসদে বসতে গেলে বাঁধা প্রদান করেন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং অফিস থেকে বের হয়ে যেতে সময় বেঁধে দেন তারা। ফলে স্বল্পসময়ের মধ্যে দোয়ার অনুষ্ঠান শেষ করে বেরিয়ে যান সাবেক সাংসদ মোঃ শাহজাহান ও নেতাকর্মীরা।
এসময় আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহজাহান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ,আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গরীব দুস্থ মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করতে চেয়েছি এবং আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নেতা জিয়াউর রহমান এর জন্য দোয়ার আয়োজন করেছিলাম কিন্তু প্রশাসন আমাদেরকে এই মানবিক কাজটুকু করতে দিল না!
এভাবে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা বিঘ্ন ঘটিয়ে এ দেশের মানুষের মন থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর নাম মুছে দেওয়া যাবেনা কারণ জিয়াউর রহমান এর স্থান এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষসহ সকল সাধারণ মানুষের হৃদয়ের গভীরে। আমি আজকের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং সরকারকে ভবিষ্যতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ পরিহার করে সঠিক পথে ফিরে আসার আহবান জানাই। আর তাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি ,এসব করে আমাদেরকে দমিয়ে রাখা যাবে না।
পুলিশ কর্তৃক অনুষ্ঠান বন্ধের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব এনায়েত উল্যাহ বাবুল, নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজগর উদ্দিন দুখু,নোবিপ্রবি ছাত্রদল নেতা নুর হোসেন বাবু,উপজেলা যুবদলের সভাপতি বেলাল হোসেন সুমন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা, ছাত্রদল আহ্বায়ক আলী আহসান মো: তারেক, সদস্য সচিব মামুন হাসান রোহান সহ দলীয় নেতাকর্মী বৃন্দ।
উক্ত প্রোগ্রামে বাধা প্রদান করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আজগর উদ্দিন দুখু ।
প্রোগ্রাম স্থগিত এর প্রতিক্রিয়ায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী নুর হোসেন বাবু বলেন, দেশ যে পুলিশী রাষ্ট্র হয়ে গেছে এবং মাফিয়াতন্ত্রের উপর চলছে এ ঘটনা তার ই উৎকৃষ্ট প্রমাণ । আমাদের নেতার শাহাদাৎ বার্ষিকীতে দোয়া ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ এর মতো শান্তিপূর্ণ প্রোগ্রামও আমাদের করতে দিচ্ছে না তারা! আমি নোবিপ্রবি ছাত্রদলের পক্ষ থেকে নিন্দা জানাচ্ছি এবং এ অবস্থার অবসান হতেই হবে।
উল্লেখ্য, গত রাত থেকে অনুষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও গুরু জবাইয়ে বাঁধা দেয় এবং রাত্রে পুলিশ বিভিন্ন চত্তরে টল করেন। আজ সকাল থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে বাঁধা দিয়ে থাকে।
আজ সুবর্ণচরে উক্ত প্রোগ্রাম ছাড়াও গত কয়েকদিনে মারা যাওয়া নেতাকর্মী ও নেতাদের মৃত মা-বাবার কবর জেয়ারত করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শাহজাহান।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হক জানান, উপজেলা বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কোন কর্মসূচি ছিল বলে আমার জানা নেই। পুলিশী বাঁধায় কর্মসূচি পন্ড হওয়ার অভিযোগ নাকচ করেন তিনি।
Leave a Reply