পাবনার বেড়া উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রেজাউল হক বাবু শনিবার বিকেলে বেড়া সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিজ দলের প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন।
এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী এ সংঘর্ষে ১৫ জন আহত ও ৩০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আজ রোববার ভোরে আবারো সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল জানান, ‘বেড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের মৃত্যুতে শূন্য আসনে শুক্রবার জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবুকে মনোনয়ন দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলের মনোনয়ন বোর্ড। দলের সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়ন প্রাপ্ত বাবুকে নিয়ে আমরা শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে এলাকায় ফিরে আসি। সভানেত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় হাজারো জনতা কাজিরহাট দলের প্রার্থীকে বরণ করে নেয়।
পরে দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বেড়া সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছামাত্র স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু ও তার ভাই আব্দুল বাতেনের সমর্থক ময়ছের ও চৌদ্দর সহযোগীরা আমাদের গাড়িবহরের পথরোধ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা রেজাউল হক বাবুর গাড়িসহ ৩০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মঞ্জু, কালু, আলফু খান, বাধন শেখ, মিরাজ হোসেন, তারেক, আলী ড্রাইভার, জুলহাস, আওয়াল মাষ্টার, মনছের মোল্লা, আজাদ মুন্সী, স্বাধীনসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরে স্থানীয় বাজারের লোকজন তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল আরো বলেন, ‘সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপির ভাই আব্দুল বাতেন নিজ অপকর্মের কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেড়া পৌর মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। বিষয়টির জন্য এমপি টুকু অকারণেই আমাদের দায়ী করছেন। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে তার নিজের মতো করে ব্যবহার করছেন। আজকের হামলার সময়ও পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। আমরা বেড়া থানা পুলিশের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের বদলির দাবি করছি।’
আওয়ামী লীগ মনোনীত বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রেজাউল হক বাবু বলেন, ‘বড় দল হিসেবে দলের ভেতরে মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। কিন্তু সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অমান্য করে এমন হামলা মেনে নেয়া যায় না। তিনি এই হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।’
এ বিষয়ে বেড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শেখ জিল্লুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজনের ওপর কতিপয় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছেন এবং কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। প্রার্থীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। প্রভাবশালী কারো দ্বারা পুলিশ প্রভাবিত নয়। অভিযোগের সত্যতা পেলে যে কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Leave a Reply