গাজীপুরে চকলেট বিক্রেতা এক কিশোরীকে (১৬) শনিবার রাতে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করেছে পরিবহন শ্রমিকেরা। এ ঘটনায় জড়িত বাসের চালক সাদ্দাম হোসেনকে (২২) পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে চালকের সহকারী (হেলপার) শরীফ হোসেন (২০) পালিয়ে গেছে। ভিকটিম কিশোরী রবিবার দুপুরে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার যুবকের নাম সাদ্দাম হোসেন। সে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বাগতা এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাসন থানার ইটাহাটা এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে তাকওয়া পরিবহনের বাস চালাতো সে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাড়ি জামালপুরের জেলার ইসলামপুর উপজেলার পূর্ব বামনা এলাকায়। সে ঢাকার আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে যাত্রীবাহী বিভিন্ন বাসে ফেরি করে চকলেট বিক্রি করে। শনিবার রাত নয়টার দিকে চকলেট বিক্রির উদ্দেশ্যে ওই কিশোরী গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা বাসস্ট্যান্ডে আসে। এ সময় সেখানে তাকওয়া পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস নিয়ে অপেক্ষমাণ পূর্ব পরিচিত হেলপার শরীফ হোসেন ও চালক সাদ্দাম হোসেন গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় বেড়াতে যাবে কিনা জিজ্ঞেস করলে কিশোরীটি বাসে ওঠে। পরে বাসটি যাত্রী নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তায় আসে। পরে সেখান থেকে যাত্রী নামিয়ে খালি বাসে ভিকটিমকে নিয়ে পুনরায় কালিয়াকৈরের দিকে যায়।
তিনি জানান, কালিয়াকৈরের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার ফ্লাইওভারের ওপরে বাসটিকে থামিয়ে চালক ও হেলপার চকলেট বিক্রেতা কিশোরীকে কুপ্রস্তাব দেয়। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চালক ও হেলপার কিশোরীকে জাপটে ধরে পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় ভিকটিম চিৎকার শুরু করলে টহল পুলিশ ও স্থানীয়রা এগিয়ে আসতে থাকলে তারা ওড়না দিয়ে কিশোরীর মুখ বেঁধে ফেলে। পরে সাদ্দাম হোসেন বাসটি চালিয়ে চন্দ্রার দিকে যেতে থাকে। এ সময় পুলিশ পেছন থেকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে চন্দ্রা থেকে ইউটার্ন নিয়ে বাসটি মৌচাক দিয়ে ভান্নারার শাখা রাস্তায় ঢুকে পড়ে পুলিশকে এড়ায়।
ওসি আরও জানান, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বাসটি গভীর রাতে কালিয়াকৈরের জামালপুর যাওয়ার পথে কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে হেলপার শরীফ হোসেন। পরে বাসটি গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার মেম্বারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছলে জয়দেবপুর থানার টহল পুলিশ বাসটিকে থামার সিগন্যাল দেয়। উপায় না দেখে চালক বাসটি পুলিশ ব্যারিকেডে থামালে শরীফ নেমে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বাস থেকে ভিকটিম কিশোরীকে উদ্ধার এবং সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে বাসের হেলপার শরীফ হোসেন ও চালক সাদ্দাম হোসেনকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর হেলপার শরীফ হোসেন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। সে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাসন থানার ইটাহাটা এলাকায় বাস করে।
Leave a Reply